বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও) বিশ্বের অধিকাংশ দেশকে করোনার ঝুঁকিতে রেখে ধনী দেশগুলোর বুস্টার ডোজ নেয়ার ভাবনাকে কান্ডজ্ঞান হীন লোভ হিসেবে উল্লেখ করে বলেছে, এর ফলে মহামারি দীর্ঘায়িত হবে।
সংস্থাটি বলছে, জেনে-বুঝে যদি বিশ্বের দুর্বলতম দেশগুলোকে মহামারির দয়ার ওপর ছেড়ে দেয়া হয় তবে পৃথিবী নিজের দিকে লজ্জাভরে ফিরে তাকাবে।
একইসঙ্গে জাতিসংঘের সংস্থাটি দরিদ্র দেশগুলোর স্বাস্থ্য কর্মী ও বয়স্কদের সম্পূর্ণ টিকাহীন রেখে টিকা উৎপাদনকারীদের বুস্টার তৃতীয় ডোজের অগ্রাধিকার দেয়ার বিষয়কে তীব্রভাবে তিরস্কার করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে সংস্থা প্রধান টেডরস আধানম গেব্রিয়াসিমকে যে প্রশ্ন সবচেয়ে বেশি সময় শুনতে হয় তা হলো কবে এই মহামারির অবসান হবে?
এবারও একই প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা একে খুব শিগগীরই শেষ করতে পারি। কারণ আমাদের হাতে অস্ত্র আছে। কিন্তু বিশ্বে যোগ্য নেতৃত্বের অভাব রয়েছে।
তিনি বলেন, ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদ এই সংকটকে দীর্ঘায়িত করবে। একে এক শব্দে ব্যাখ্যা করে লোভ বলা যায়। টেডরস আরো বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে ভাইরাস সংক্রমণ রেখে বুস্টার ডোজ দেয়ার বিষয়টি হবে হিতে বিপরীত। এর কোন মানে নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, সংস্থার প্রধান বৈজ্ঞানিক সোমা স্বামীনাথান বলেছেন, ইতোমধ্যে চারটি দেশ বুস্টার ডোজ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে, এবং কিছু দেশ এ উদ্যোগ নেয়ার কথা ভাবছে। তিনি আরো বলেন, এ ধরনের ডোজের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে বর্তমানে কোন বৈজ্ঞানিক তথ্য প্রমাণ নেই।
এদিকে টেডরস টিকা উৎপাদনকারী মর্ডানা ও ফাইজারকে লক্ষ্য করে বলেন, যে সকল দেশের জনগণ ইতোমধ্যে টিকা পেয়ে তুলনামূলক নিরাপদ রয়েছে তাদের বুস্টার ডোজের বিষয়ে অগ্রাধিকার না দিয়ে বরং কোভ্যাক্সের সরবরাহ চ্যানেলকে জোরদার করা উচিত।
এছাড়া টেডরস গত সপ্তাহ পর্যন্ত পর পর চার সপ্তাহ ধরে বিশ্বে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কথা তুলে ধরে বলেন, বিশ্বের ১০৪টিরও বেশি দেশে করোনার উদ্বেগজনক ডেল্টা ধরণ ছড়িয়ে পড়েছে। আর শিগগীরই এই ধরণটি বিশ্বব্যাপী করোনার মূল স্ট্রেইন হয়ে উঠবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।