ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ এবং তুহিন সিদ্দিকী অমির বিরুদ্ধে আলোচিত অভিনেত্রী পরী মনির দায়ের করা ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত। তবে চার্জশিটের ওপর পরীমনির নারাজির আবেদন (প্রতিবেদনের ওপর অনাস্থা) খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলাটিতে আরেক আসামি শহিদুল আলম পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের বিষয়ে আগামী ৩ মার্চ তামিল করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এর বিচারক মোহাম্মদ হেমায়েত উদ্দিনের আদালত মামলাটির চার্জশিট গ্রহণ করে এ আদেশ দেন।
এর আগে, গত ১ ডিসেম্বর পরী মনির মামলাটির চার্জশিট গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। এজন্য আদালতে আসামি নাসির ও অমি উপস্থিত হন। একই সাথে আসামিদের বিরুদ্ধে দাখিল করা চার্জশিটের ওপর নারাজি (প্রতিবেদনের ওপর অনাস্থা) দিতে আদালতে হাজির হন মামলার বাদী পরীমনি। চার্জশিট শুনানিতে নাসির ও অমি আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।
অন্যদিকে পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সৌরভী আসামিদের জামিনের বিরোধীতা করে চার্জশিটের ওপর পরী মনির নারাজির আবেদন করেন। নারাজির জবানবন্দিতে পরীমনি বলেন, ‘মামলাটি ঠিকভাবে তদন্ত হয়নি। মামলার তদন্ত একতরফা হয়েছে।’ পরে শুনানি শেষে বিচারক আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন। আর নারাজি আবেদনের শুনানির জন্য আজকের দিনটি ধার্য করেন।
গত ১৩ জুন রাতে ফেসবুক পোস্টে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চেয়ে পরীমনি অভিযোগ করেন, ৯ জুন উত্তরার বোট ক্লাবে তাকে ধর্ষণ ও হত্যারচেষ্টা চালান ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় পরের দিন দুপুরে পরী মনি নিজে বাদী হয়ে সাভার থানায় নাসির-অমিসহ আরও কয়েকজনকে আসামি করে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন।
পরীমনির এ মামলার প্রেক্ষিতে ওইদিন অমির উত্তরার বাসায় অভিযান চালিয়ে নাসির উদ্দিন ও অমিসহ তাদের তিন নারী সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। অভিযানে এসময় অমির বাসায় তল্লাশি চালিয়ে এক হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, বিদেশি মদ ও বিয়ার জব্দ করা হয়। অভিযানের সেদিন দিনগত রাত ১২টার সময় ডিবির গুলশান জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মানিক কুমার সিকদার বাদী হয়ে রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
মাদক মামলায় ১৫ জুন তাদের আদালতে হাজির করা হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসি শুনানি শেষে নাসির-অমির সাত দিনসহ তিন নারীকে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে ৩০ জুন এ মামলায় অমি বাদে নাসিরসহ তিন নারী সহযোগীর জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। এছাড়া পরীমনির করা ধর্ষণচেষ্টার মামলায় ২৩ জুন নাসির-অমির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত। পরে এ রিমান্ড শেষে ২৯ জুন এ মামলাতেও তাদের জামিন দিয়েছিলেন আদালত।