নতুন অর্থবছরেও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে সরকারের সংযমী ব্যয় নীতি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। শনিবার ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেছেন, করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যয় করা হবে না। অপচয় বন্ধ করাও এর উদ্দেশ্য।
তিনি জানান, এদিন ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ১৬টি প্রকল্পে কেনাকাটার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসব কেনাকাটায় এক হাজার ৬০৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে সরকারের তহবিল থেকে দেওয়া হবে এক হাজার ৫৫২ কোটি টাকা। আর ৫৩ কোটি টাকা আসবে বিশ্বব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে।
চলতি অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রথমে ৭০ শতাংশ এবং পরে তা বাড়িয়ে ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ ছাড় করেছে সরকার। অন্যান্য ক্ষেত্রেও সরকার ব্যয় কম করেছে। এই কৃচ্ছ্রসাধন নীতি নতুন অর্থবছরের উন্নয়ন ব্যয়ের ক্ষেত্রে থাকবে কি-না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার কম ব্যয় করেছে এই মতের বিরোধী আমি। করোনার কারণে বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্বেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। এরকম অবস্থায় সরকার যতটা প্রয়োজন ততটাই ব্যয় করতে চেয়েছে। যাতে অপচয় না হয়। সরকার এখনও অপচয় করতে চায় না।’
এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউনে নগরের দরিদ্যদের নিয়ে অর্থমন্ত্রীর কোনো পরিকল্পনা আছে কি-না জানতে চাইলে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘এ বিষয়ে আলাদা কমিটি আছে। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি দেখাশোনা করেন। কোনো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার দরকার হলে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেবেন।’
একই বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার দুস্থদের সহায়তা করে যাচ্ছে। নগদ অর্থ দিচ্ছে। যারা সমস্যায় আছেন বলে চিহ্নিত করা গেছে তাদের নগদ সহায়তা করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও করা হবে।’
তৈরি পোশাক খাতে দেওয়া বিশেষ প্রণোদনা সুবিধার শেষ কিস্তি ছাড়ের সময় হয়েছে। নতুন করে লকডাউনসহ অন্যান্য পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা প্রণোদনার সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন। বিষয়টি বিবেচনা করা হবে কি-না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘যে উদ্দেশ্য নিয়ে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছিল, তার এখন প্রয়োজন আছে কি-না সেটা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কথা বলবেন।’
অর্থনীতিতে লকডাউনের প্রভাব কী হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরকার সব সময়ই ভালো প্রত্যাশা করে। এখনও তাই করছে। গত বছরও লকডাউন ছিল, তার মধ্যে যেসব লক্ষ্য ছিলো সেগুলো অর্জিত হয়েছে। বিশেষ করে রাজস্ব বেড়েছে ১৭ শতাংশ। রেমিট্যান্স, রিজার্ভ বেড়েছে। এ বছরও আশা করা যায় ভালো হবে। তবে অন্যান্য সবার মতো সরকারেরও একটা উদ্বেগ আছে। সেটা হচ্ছে টিকাদান। অবশ্যই দ্রুত টিকা দিতে হবে। সরকার টিকা সংগ্রহের সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। আশা করা যায় দ্রুত টিকা পাবেন জনগণ।’