নতুন করে আইন প্রণয়ন সম্ভব না হলে অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটির পরিবর্তে ব্যক্তিত্বসম্পন্ন দেশপ্রেমিক মানুষদের নিয়ে গ্রহণযোগ্য পাঁচ সদস্যের একটি নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। কমিশনে অন্তত দুজন নারী সদস্য রাখারও প্রস্তাব করেছে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর দল। রবিবার নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে চলমান সংলাপের ১২তম দিনে আলোচনায় অংশ নিয়ে আইন প্রণয়নসহ ছয়টি প্রস্তাবনা দেয় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ।এতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচন পরিচালনার প্রস্তাব করেন বঙ্গবীর।
সংলাপ শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন ব্রিফিংয়ে বলেন, এক ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় নয় সদস্যের প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতিকে আইন প্রণয়নসহ ছয় দফা প্রস্তাব করেন। তারা নির্বাচন কমিশনকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো মতামত না নিয়ে কোনো নির্বাচনী বিধিবিধান প্রণয়ন না করার প্রস্তাব করেন। সংলাপে অংশ নেওয়া দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের দক্ষতার চেয়েও সরকারের নিরপেক্ষতা বেশি জরুরি। বঙ্গভবনে তাদের স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা অপরিহার্য।
রাষ্ট্রপ্রধান তাদেরকে আলোচনায় অংশ নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান। রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন। প্রেস সচিব জানান, রাষ্ট্রপতি এখন পর্যন্ত ১৭টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ১২ দিনে পৃথক পৃথকভাবে বৈঠক করেছেন। গত ২০ ডিসেম্বর চলমান সংলাপের প্রথম দিনে সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সাথে আলোচনায় বসেন রাষ্ট্রপতি হামিদ। এর মধ্যে চারটি রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রপতির সাথে সংলাপে অংশ নেননি। দলগুলো হলো: বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)।
প্রেস সচিব জানান, আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ এ যাবত নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৩২টি রাজনৈতিক দলকে বঙ্গভবনে আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছে। আগামী ১০ জানুয়ারি রোজ সোমবার সংলাপ হবে জাতীয় পার্টি (জেপি) এর সঙ্গে সন্ধ্যা ছয়টায় এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সঙ্গে সন্ধ্যা সাতটায়।
মঙ্গলবার ১১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টায় সংলাপ হবে ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের সঙ্গে এবং ঐদিন সন্ধ্যা সাতটায় বৈঠক হবে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ) এর সাথে। বিএনপির সঙ্গে সংলাপ হওয়ার কথা রয়েছে ১২ জানুয়ারি বিকাল চারটায় এবং ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি এনপিপির সঙ্গে একই দিনে সন্ধ্যা ছয়টায় আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টায় সংলাপ হবে জাকের পার্টির সঙ্গে। এদের পর সন্ধ্যা সাতটায় বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সঙ্গে এবং সন্ধ্যা আটটায় বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেবি) এর সঙ্গে। ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি সংলাপে বসবেন আগামী ১৭ জানুয়ারি বিকাল চারটায়।