বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড۔ সেলিম মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি চালাচ্ছে কিছু নীতিহীন, সুবিধাবাদী ও বহুরূপী ব্যক্তি l তিনি বলেন, বিএনপি নেতা মেজর হাফিজ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যে মন্তব্য করেছেন, সেটি একদিকে যেমন হাস্যকর, অন্যদিকে ঔদ্ধত্যপূর্ণ l আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে মেজর হাফিজ যে মন্তব্য করেছেন, সেটিকে ড۔ সেলিম মাহমুদ পাগলের প্রলাপ বলে উল্লেখ করেন l তিনি বলেন, গত সাত দশকের বেশী সময় আওয়ামী লীগ এদেশের কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসায় বেঁচে আছে l আওয়ামী লীগের শেকড় সমগ্র বাংলাদেশে বিস্তৃত এবং এই শেকড় অত্যন্ত মজবুত l আওয়ামী লীগ এদেশের প্রতিটি ধূলিকণায়, প্রতিটি ঘাসের সাথে মিশে আছে l জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এই দেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন l তাঁর নেতৃত্বেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল হিসেবে বাঙালীর মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে l বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ডাটাবেস টীমের এক ভার্চুয়াল সভায় আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড۔ সেলিম মাহমুদ একথা বলেন l
ড۔ সেলিম মাহমুদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মেজর হাফিজের মন্তব্যে তাদের ইতিহাস বিকৃতি ও মিথ্যাচারের রাজনীতির পুরনো মানসিকতাই ফুটে উঠেছে l এই সকল নেতারা এখনো মানুষ হতে পারলেন না l
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জিয়ার সরাসরি যুক্ত থাকার বিষয়টি দালীলিকভাবে প্রমাণিত l অথচ মেজর হাফিজরা বলছেন, এটি আওয়ামী লীগের মিথ্যা প্রচারণা l “জিয়াউর রহমান একজন সৈনিক ছিলেন- যিনি সংবিধান সম্মুন্নত রাখার চেষ্টা করেছিলেন l জিয়ার মতো একজন সাদা মনের মানুষকে আজকে তারা খুনি হিসেবে দেশবাসীর সামনে উপস্থাপন করতে চায়”- মেজর হাফিজের এমন মন্তব্যে ড۔ সেলিম বলেন, জিয়া শুধু সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার মূল নির্দেশদাতা-ই ছিলেন না, ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ পর্যন্ত অসংখ্য সেনা কর্মকর্তা- সৈনিককে জিয়া হত্যা করেছিলেন l
মেজর হাফিজ কী ভুলে গেছেন, আজ থেকে ৪৬ বছর আগে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার কারণে এবং বঙ্গবন্ধুর খুনীদের সার্বক্ষণিক প্রশ্রয় ও সমর্থন দেয়ার কারণে আরও কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার সাথে এই মেজর হাফিজ মোশতাক-জিয়ার বিরুদ্ধে ক্যু করেছিলেন l জেনারেল জিয়াকে যে কয়েকজন অফিসার সেদিন বন্দী করেছিলেন, মেজর হাফিজ তাদের অন্যতম l সেই ক্যু ব্যর্থ হওয়ায় জিয়ার নির্দেশে হাফিজরা গ্রেফতার হয়েছিলেন l জিয়ার নির্দেশে কোর্ট মার্শালে মেজর হাফিজদের মৃত্যুদণ্ড দেয়ার আয়োজন যখন চলছিল, তখন জেনারেল মঞ্জুরের মধ্যস্থতায় মেজর হাফিজসহ কয়েকজন সেনাবাহিনী থেকে বিদায়ের শর্তে প্রাণে রক্ষা পান l
পরবর্তীতে মেজর হাফিজের বহুরূপী চরিত্র অনেকেই দেখেছেন l বিএনপি সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আশির দশকে এরশাদের দলে যোগদান, এরশাদ সরকারের প্রতিমন্ত্রীর পদ পাওয়া, এরশাদের পতনের পর সুযোগ-সুবিধার হিসাব নিকাশ করে খালেদা জিয়ার বিএনপিতে যোগদান, বিএনপি’র মন্ত্রিত্ব পাওয়া, পরবর্তীতে বিএনপি’র বিপর্যয়ের পর এক-এগারোতে অরাজনৈতিক শক্তির উচ্ছিষ্টভোগী হিসেবে নিজের নাম লেখাতে সক্রিয় ছিলেন এই মেজর হাফিজ l ওয়ান- ইলেভেনের পর আবার বিএনপি’র রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়া এই মেজর হাফিজরা নীতিহীন ও সুবিধাবাদী রাজনীতির প্রতিভূ l তাদের মুখে বাঙালির মুক্তিসংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী দল, বাংলার গণমানুষের দল আওয়ামী লীগকে ভয় দেখানো মানায় না l এটি চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও হাস্যকর l
ড۔ সেলিম বলেন, যারা আফগানিস্তানের ভয় বাংলার মানুষকে দেখাতে চায়, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে l এই রাষ্ট্র বঙ্গবন্ধুর, এই রাষ্ট্র শেখ হাসিনার l ষড়যন্ত্রকারীরা শুধু একবারই সফল হয়েছিল- সেটি ১৯৭৫ সালে জাতির পিতার অন্ধ বিশ্বাসের কারণে l এখন সেই সুযোগ কোন ষড়যন্ত্রকারীর নেই l সকল ষড়যন্ত্রকারীকে নির্মূল করার সক্ষমতা এখন আমাদের রয়েছে l
আওয়ামী লীগের ডাটাবেস টীমের এই ভার্চুয়াল সভায় সংযুক্ত ছিলেন ডাটাবেস টীমের সদস্য সাবেক ছাত্রনেতা সাজ্জাদ সাকিব বাদশা, নাসিম রূপক, আশরাফ সিদ্দিকী বিটু, নুরুল আলম পাঠান মিলন, জাফরুল জুয়েল, আমজাদ হোসাইন বাচ্চু, রায়হান কবির, আদিত্য নন্দী, আহমেদ কৌশিক প্রমুখ l