প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, সবদিক থাকে আমাদের নৈতিক অধপতন হয়েছে। আমাদের সব কাজে তদবির করতে হয়। তিনি বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে অনেক হয়রানি আর ভোগান্তি হচ্ছে। কিছু কিছু মানুষের জন্য সুনাম বিঘ্নিত হচ্ছে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তির ক্ষেত্রে উদ্ভুত সমস্যাসমূহ নিরসনের উপায় নির্ধারণ শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সকালে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনিস্টিটিউটে এ কর্মশালার আয়োজন করে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ।
কর্মকর্তাদের প্রভুর মতন আচরণ করা থেকে বিরত থেকে জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করার পরামর্শ দিয়ে সিইসি বলেন, আমরা যখন কাজে যোগ দেই জনগণের ভৃত্য হিসেবে। আর কাজে যোগ দিয়ে প্রভুর মতো আচরণ করি। কিন্তু আমাদেরকে প্রভুর মতন আচরণ করলে চলবে না। আমাদেরকে অন্তর দিয়ে জনগনের সেবক ভৃত্য হিসেবে নিজেদেরকে মেনে নিতে হবে। তিনি আরো বলেন, কিছু কিছু মানুষের জন্য আমাদের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা যদি দক্ষতার সাথে এবং সততার সাথে পালন না করে, তাহলে পুরো নির্বাচন কমিশনকে সেই বদনামের দায়ভার নিতে হবে। এই বিষয়টি নজরে রাখতে হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রয়োজন অপরিসীম উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ভুল বিভিন্ন কারণে হতে পারে। কারেকশনের ক্ষেত্রে কিন্তু চাহিবামাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে তা নয়। আমাদের পরীক্ষা নীরিক্ষা করতে হবে। কিন্তু মানুষ যেনো হয়রানির শিকার না হয়।
এনআইডির গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে সিইসি বলেন, এটার (এনআইডি) আদিমত্য আছে, আমরা সিনেমাতে দেখেছি যে আদিকালে রাজা বা সম্রাট তার দূত পাঠাতেন অন্য সম্রাটের কাছে, উনি সেখানে গিয়ে তার পরিচয়পত্র পেশ করতেন। পরিচয়ের কিন্তু প্রয়োজন আছে, সেটার আবশ্যকতার অস্বীকার করার উপায় নেই। আইডেনটিটি কার্ডের প্রয়োজনীয়তা কিন্তু ব্যাপক। আমার জীবনে আইডি কার্ডের শুরু হয়েছিল ক্লাস সিক্স থেকে। তখন স্কুল থেকে ছবিযুক্ত দুইপাতার আইডেনটিটি ছিল। তখন আইডেনটিটি কার্ডের প্রয়োজন ছিল দুইটি ক্ষেত্রে, একটি বাসে অর্ধেক ভাড়া নিতো আর সিনেমা হলে দেখতে গেলে স্টুডেন্ট পরিচয় দিলে অর্ধেক পয়সায় আমরা সিনেমা দেখতে পারতাম। এরপর যখন যুদ্ধ শুরু হলো তখন আমি ক্লাস টেন-এ পড়ি। তখন এটাকে ডন্ডি বা ডান্ডি কার্ড বলা হতো। পাকিস্তানিরা আইডেনটিটি কার্ড উচ্চারণ করতে পারতেন না। আমরা সবাই ওইটাকে ডন্ডি কার্ড বা ডান্ডি কার্ড বলতাম। তখন একটি ডান্ডি কার্ড রাখতে হতো যে, আমি যে মুসলমান বা হিন্দু নই এটা প্রমাণের জন্য। অ্যাডভোকেট হিসেবে আইডেনটিটি কার্ড পেয়েছিলাম, তারপর যখন সহকারি সচিব হলাম মন্ত্রণালয়ের সহকারি সচিব হিসেবে পেয়েছি। জয়েন সেক্রেটারি হিসেবে পেয়েছি। এখনো আমার একটি ভ্যালিড আইডেনটিটি কার্ড আছে সিনিয়র সচিব হিসেবে। ২৩ সালের জন মাস পর্যন্ত এটার মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে চার নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থান করেন জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ূন কবীর।