নদী রক্ষা ও নৌখাতের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারের কথা বিবেচনা করে নৌ পরিবহন অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কাজে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও গতিশীলতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে পাঁচটি বেসরকারি সংগঠন।
মঙ্গলবার (২২ জুন) এক যৌথ বিবৃতিতে পরিবেশ ও নাগরিক অধিকার সংরক্ষণবিষয়ক এসব সামাজিক সংগঠনের নেতারা এই দাবি জানান।
বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের বরাত দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, উচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে দেশের সকল নদী দখলমুক্ত করতে সরকারের কঠোর নির্দেশনা থাকলেও নদীতীরের অবৈধ স্থাপনা অপসারণে বিআইডব্লিউটিএর বিরুদ্ধে নানা অসঙ্গতির অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় নদী খনন, ড্রেজার পরিচালনা ও সংরক্ষণ এবং নৌযানের সময়সূচি ও রুট পারমিট প্রদানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। ড্রেজারের জ্বালানি সরবরাহ ও মেরামত খরচের নামে ব্যাপক অর্থ লোপাটের অভিযোগও উঠেছে সংস্থাটির বিরুদ্ধে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সরকার দুর্ঘটনা রোধে ত্রুটিপূর্ণ নৌযানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও দক্ষ মাস্টার-ড্রাইভার তৈরির ওপর গুরুত্ব দিলেও নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নৌযানের বার্ষিক সার্ভে (ফিটনেস পরীক্ষা), নতুন নৌযান নিবন্ধন এবং মাস্টারশিপ ও ড্রাইভারশিপ পরীক্ষায় নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এমনকি দুই বছর আগে দুর্ঘটনাকবলিত হয়ে মেঘনায় ডুবে থাকা জাহাজের বার্ষিক সার্ভে সনদ দেয়ার তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নৌযান সার্ভে ও নিবন্ধনে অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সিদ্ধান্তে ও নৌ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে দু’জন ‘ইঞ্জিনিয়ার ও শিপ সার্ভেয়ার’ এর বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও সেই তদন্ত প্রতিবেদন আজো প্রকাশ করেনি নৌ অধিদপ্তর। নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের অঙ্গ সংস্থা নৌ বাণিজ্য দপ্তরের সাবেক এক মূখ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিদেশে চিকিৎসাধীন থেকে দেশের ডকইয়ার্ড ও জাহাজ পরিদর্শনের নামে সরকারি কোষাগার থেকে লাখ লাখ টাকা উত্তোলনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও কমিটি দীর্ঘ ১০ মাসেও প্রতিবেদন জমা দেয়নি বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
সামাজিক সংগঠনগুলোর নেতারা বলেন, নদ-নদী রক্ষাসহ নৌ পরিবহন ব্যবস্থার সোনালী অতীত ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য নৌ অধিদপ্তর ও বিআইডব্লিউটিএর সকল কাজে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও গতিশীলতা নিশ্চিত নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই। তা না হলে সরকারের সকল পরিকল্পনা, উদ্যোগ ও বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়- সবই বিফলে যাবে। বিবৃতিদাতারা হলেন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদ মিয়া, গ্রিন ক্লাব অব বাংলাদেশের (জিসিবি) সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের সদস্যসচিব আমিনুর রসুল বাবুল, সিটিজেন্স রাইট্স মুভমেন্টের মহাসচিব তুসার রেহমান এবং পোভার্টি ইলুমিনেশন এ্যাসিস্ট্যান্স সেন্টার ফর এভরিহোয়্যার (পিস) এর মহাসচিব ইফমা হুসেইন।