নানা নাটকীয়তার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পরামর্শে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এ বিষয়ে অফিসিয়াল নোটিফিকেশন জারি করা হয়েছে। ফলে নিয়ম অনুযায়ী আগামী ৯০ দিনের মধ্যে সেখানে নতুন পার্লামেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ। এর আগে ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীরা পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করে। তা ভোটে দেয়া নিয়ে কয়েকবার বিলম্ব করে পার্লামেন্ট। অবশেষে আজ রোববার ছিল পার্লামেন্টে ইমরান খানের ভাগ্য নির্ধারণী দিন। এদিন ওই প্রস্তাবের ওপর ভোট হওয়ার কথা ছিল পার্লামেন্টে।
আর তা হলে ইমরানের ক্ষমতা হারানোর সমুহ আশঙ্কা ছিল। কারণ, অনাস্থা প্রস্তাব পাস হতে বিরোধীদের প্রয়োজন ছিল ১৭২ টি আসনের সমর্থন। কিন্তু তাদের হাতে জমা ছিল ১৯৯টি আসনের সমর্থন। ফলে ভোট হলে বিরোধীরা জিতে যেতেন। ক্ষমতা হারাতেন ইমরান খান। কিন্তু এই প্রস্তাবকে পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি অসাংবিধানিক বলে আখ্যায়িত করে প্রস্তাবকে খারিজ করে দেন। এর পরপরই প্রধানমন্ত্রী বিস্ময়করভাবে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলফিকে পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার পরামর্শ দেন।
জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি বলেছেন, এই অনাস্থা প্রস্তাব সংবিধানের ৫ ধারা অনুযায়ী অসঙ্গতিপূর্ণ, সাংঘর্ষিক। এর কিছুক্ষণ পরেই জাতীয় পরিষদ বা পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করতে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভিকে পরামর্শ দেন ইমরান। আজ রোববার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি এই আহ্বান জানান বলে খবর দিয়েছে অনলাইন ডন। ওদিকে তার বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর জাতীয় পরিষদে ভোটের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু কোনো কোনো মাধ্যমে বলা হচ্ছে, এতে প্রধানমন্ত্রী ইমরানের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি সেখানে ছিলেন না। সর্বশেষ খবরে বলা হচ্ছে, ইমরান খান এ সময়ে অবস্থান করেন প্রধানমন্ত্রী হাউজে। বিশেষ পরিস্থিতি সৃষ্টি না হলে তিনি সেখানেই থাকবেন। ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরির সভাপতিত্বে নিম্নকক্ষে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অধিবেশন শুরু হয় ।
অনলাইন ডন বলছে, ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরির সভাপতিত্বে এ অধিবেশন শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যে তা গুটিয়ে ফেলা হয়। এতে তিনি অনাস্থা প্রস্তাবকে অসাংবিধানিক বলে আখ্যায়িত করেন। এর ফলে বিরোধী দলগুলোর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ হয়ে যাওয়ায় জাতির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ইমরান খান। এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, ডেপুটি স্পিকার শাসকগোষ্ঠীর পরিবর্তনে বিদেশি ষড়যন্ত্র প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি আরও জানান বহু মানুষ উদ্বেগে ছিলেন। তারা তাকে টেক্সট ম্যাসেজ পাঠিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, জাতির সামনে বিশ্বাসঘাতকতা করা হচ্ছে। ইমরান বলেন আমি তাদেরকে বলেছি ঘাবরানা নাহি হ্যায়। ঘাবড়িও না। পাকিস্তানের দিকে দৃষ্টি আছে আল্লাহর। ইমরান খান আরও বলেন, তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ দেন। গণতান্ত্রিক ব্যক্তিদের উচিত জনগণের কাছে যাওয়া এবং নির্বাচন করা। তখন জনগণই সিদ্ধান্ত জানাবে কাকে ক্ষমতায় চায় তারা।