প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটি। সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে সিটির কাছে কোন পাত্তাই পায়নি পিএসজি। নজরকাড়া পারফরম্যান্স দেখিয়ে গত আসরের রানার্সআপের দলটিকে বিদায় করলো পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা।
মঙ্গলবার রাতে ইতিহাদ স্টেডিয়ামের ম্যাটিতে ২-০ গোলে জিতে ম্যানসিটি। দুই অর্ধে একবার করে বল জালে পাঠান রিয়াদ মাহরেজ। গত সপ্তাহে প্রথম লেগের ম্যাচে ২-১ ব্যবধানে জয় পায় সিটি। এবার দ্বিতীয় লেগে ২-০ গোলের জয় পেল, তাতে দুই লেগের অগ্রগামিতায় ৪-১ গোলের ব্যবধানে ফাইনালে গেল ম্যানসিটি।
যদিও চোটের কারণে পিএসজির তারকা কিলিয়ান এমবাপে মাঠে নামতে পারেননি। তার উপর দ্বিতীয়ার্ধের মাঝপথে ১০ জনের দলে পরিণত হয় পিএসজি। তবে ম্যাচে নেইমার ছিলেন, কিন্তু নিজের ছায়া হয়ে।
অবশ্য শুরুতেই বিপদে পড়েছিল ম্যানসিটি। ৭ মিনিটে নেইমারের ক্রস বক্সের মধ্যে ওলাক্সান্দার জিনচেঙ্কো বিপদমুক্ত করেছিলেন। পিএসজির খেলোয়াড়রা হ্যান্ডবলের দাবি করলে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। কিন্তু স্বাগতিকরা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলে রেফারি ভিএআর যাচাই করেন। রিপ্লেতে বল জিনচেঙ্কোর হাতে নয়, কাঁধ ছুঁতে দেখা গেছে। বাতিল হয় পেনাল্টির সিদ্ধান্ত।
পাঁচ মিনিট পরেই গোল খেয়ে বসে পিএসজি। দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে কেভিন ডে ব্রুইনের শট মার্কিনিয়োসের পায়ে লেগে বল চলে যায় ডান দিক। ছুটে গিয়ে জোরালো কোনাকুনি শটে গোলরক্ষক কেইলর নাভাসকে পরাস্ত করেন মাহরেজ।
১৭তম মিনিটেই সমতা ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল পিএসজি। ডি মারিয়ার ক্রস থেকে হেড করেছিলেন মার্কিনিয়োস। কিন্তু সেটা ক্রসবারে লেগে ফেরত আসে। ফলে এক গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় পিএসজি।
দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে নেইমারের একটি দুর্দান্ত শট ব্লক করে ফরাসিদের হতাশ করেন জিনচেঙ্কো। ৬২ মিনিটে দলে দুটি বদল আনে পিএসজি। মাউরো ইকার্দির জায়গায় মোয়াসে কিন ও অ্যান্ডার হেরেরাকে উঠিয়ে হুলিয়ান ড্রাক্সলারকে নামায় তারা। তাতে বদলায়নি তাদের ভাগ্য।
বরং ৬৪তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ম্যানসিটি। ডি ব্রুইনার সঙ্গে ওয়ান-টু পাস থেকে বক্সের মধ্যে ঢুকে ডান দিকে বল বাড়ান ফিল ফোডেন। বল গড়িয়ে মাহরেজের সামনে পড়ে। আর কোনাকুনি শটে স্কোরলাইন ২-০ করেন মাহরেজ।
দুই গোল খেয়ে মেজাজ ধরে রাখতে পারেনি পিএসজি। ৬৯তম মিনিটে ডি মারিয়া লাল কার্ড দেখলে পিএসজির ঘুরে দাঁড়ানোর আশা বলতে গেলে শেষ হয়ে যায়। বল কাড়াকাড়ি করতে গিয়ে ফের্নান্দিনিয়োকে লাথি মারেন ডি মারিয়া, তাতে সরাসরি লাল কার্ড দেখান রেফারি।
বাকি সময়ে আর ব্যবধান বাড়াতে পারেনি ম্যানসিটি, তেমনি পিএসজিও পারেনি কোন গোল করতে। ফলে শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে ফেটে পড়ে গার্দিওলার শিষ্যরা।
এই প্রথম ইংল্যান্ডের কোনো দল এক আসরে ১১টি ম্যাচ জিতল। পাঁচ জয় ও এক ড্রয়ে গ্রুপ পর্ব পার করা ম্যানসিটি নকআউট পর্বে জিতল সব ম্যাচ।
আগামী ২৯ মে ইস্তানবুলের কামাল আতাতুর্ক স্টেডিয়ামে প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল খেলবে ম্যানসিটি। তাদের প্রতিপক্ষ হবে রিয়াল মাদ্রিদ অথবা চেলসি।