পুঁজিবাজারে সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার (২৩ জুন) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সূচকের ওঠানামায় লেনদেন হয়। এরপর হঠাৎ করে ব্যাংক-বিমার পাশাপাশি প্রকৌশল এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়ে। আর তাতে লেনেদেনের শেষ ঘণ্টায় বড়পতন হয়।
এদিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ৬৯ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক কমেছে ১৯৫ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দামও।
এই দরপতন দুই ইস্যুকে কেন্দ্র করে হয়েছে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে একটি হচ্ছে- করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ায় নতুন করে আবারও লকডাউন হতে পারে এমন শঙ্কায়। নগদ টাকার হাতে নিচ্ছেন শেয়ার বিক্রি করে।
অন্যটি হচ্ছে- পুঁজিবাজার কালো টাকা বিনিয়োগের সুবিধার নিয়ে সৃষ্ট গুজব। দিনের প্রথম দিকে খবর আসে ২০২১-২২ অর্থবছরে কালো টাকার সুবিধা রাখা হচ্ছে। এরপর শেষ বিকেলে খবর আসে কালো টাকার সুযোগ রাখা হচ্ছে না। এই খবরে শেষ ঘণ্টায় ডিএসইর প্রধান সূচক ৬ হাজার ১১৮ পয়েন্ট থেকে ৮৩ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৫ পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে।
এদিন ব্যাংক-বিমায় শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়লেও মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের শেয়ারের দাম বেড়েছে। আর তাতে আরও বড় দরপতন থেকে রক্ষা পেয়েছে পুঁজিবাজার।
বড় দরপতনের বিষয়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, করোনার বাড়ার শঙ্কা ও কালো টাকা বিনিয়োগের সুবিধা নিয়ে নানা গুজব বাজারে রয়েছে। এছাড়াও জু্ন ক্লোজিংয়ের কারণে কিছু কারেকশন হয়েছে। তবে শিগিরই মার্কেট ভালো হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ডিএসইর তথ্য মতে, বুধবার (২৩ জুন) ডিএসইতে মোট ৩৬২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৩৩টির, কমেছে ২১৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টির। তাতে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২০৩০ কোটি ৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২০১৭ কোটি ৫৬ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে।
প্রায় সব কোম্পানির শেয়ারের দাম কমায় এদিন আগের দিনের চেয়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬৯ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ছয় দশমিক ৯১ পয়েন্ট কমে ১২৯৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৬ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৮৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এদিন বাজারে লেনদেনের শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। এরপর বেশি লেনদেন হয়েছে ন্যাশনাল ফিড মিলসের শেয়ারের। এরপর ক্রমান্বয়ে রয়েছে ম্যাক্সন স্পিনিং, ড্রাগন সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং মিলস, কাট্টালী টেক্সটাইল, এসএস স্টিল, সি পার্ল রিসোট, ওরিয়ন ফার্মা, কুইন সাউথ টেক্সটাইল এবং কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড।
অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৯৫ পয়েন্ট কমে ১৭ হাজার ৫৭০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩১৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেড়েছে ১১৮টির, কমেছে ১৭৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টির শেয়ারের দাম। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৩৬ কোটি ৩৬ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬৯ টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১০২ কোটি ৫৯ লাখ ৬০ হাজার ৮ টাকা।