ব্রাজিলের আক্রমণভাগ ফর্মে নেই। তাতেও অবশ্য ব্রাজিলের কোপা আমেরিকার ফাইনালে যাওয়া রুখতে পারেনি পেরু। নেইমারের দারুণ নৈপুণ্যে ব্রাজিলকে লিড এনে দেন লুুকাস পাকুয়েতা। সেই লিড ধরে রেখেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল। নিশ্চিত হয় ব্রাজিলের টানা দ্বিতীয় ফাইনালে ওঠা। গত আসরে পেরুকে হারিয়েই শিরোপা জেতে ব্রাজিল। কোয়ার্টার ফাইনালেও ব্রাজিলের ত্রাতা ছিলেন পাকুয়েতা। তার একমাত্র গোলেই চিলিকে হারিয়েছিল দশ জনের ব্রাজিল।
১৪ বছর পর সম্ভাবনা জেগেছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ফাইনালের।
আগামীকাল দ্বিতীয় সেমিতে কলম্বিয়াকে আর্জেন্টিনা হারালেই দেখা মিলবে কাঙ্ক্ষিত দ্বৈরথের। আগামী রোববার মারাকানায় হবে ফাইনাল। কোপা আমেরিকার ফাইনালে শেষবার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মুখোমুখি হয়েছিল ২০০৭ সালে। সেবার ৩-০ গোলে জিতেছিল ব্রাজিল।
বলতে গেলে ব্রাজিলকে একাই টানছেন নেইমার। আসরে ব্রাজিল করেছে ১২ গোল। যার ৫টিতেই অবদান নেইমারের। ২ গোল ও ৩ অ্যাসিস্ট। জিতেছেন তিনটি ম্যাচসেরার পুরস্কার। ২০১৯ কোপা আমেরিকায় শিরোপাজয়ী ব্রাজিল দলে ছিলেন না নেইমার। ইনজুরি ছিটকে দিয়েছিল তাকে। তাই এখনো কোপার শিরোপা জয়ের স্বাদ পাওয়া হয়নি নেইমারের। ২৯ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের দুর্দান্ত ফর্ম ব্রাজিলকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে দশম কোপা আমেরিকা জয়ের।
রিও ডি জেনিরোর নিলতন সান্তোস স্টেডিয়ামে দুই অর্ধে দুইরকম খেলেছে ব্রাজিল। প্রথম ৪৫ মিনিট দাপুটে খেললেও বিরতির পর মনযোগী হয় লিড ধরে রাখায়। ম্যাচের শুরু থেকেই গোল পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে ব্রাজিল। ২০ মিনিটের মধ্যেই গোলমুখে পাঁচটি শট নেয় সেলেসাওরা। সবগুলোই ছিল লক্ষ্যে। পেরু গোলরক্ষক পেদ্রো গাইয়েসে একাই ঠেকিয়েছেন সব শট। নিশ্চিত গোল বাঁচিয়েছেন তিনটি। গোলবঞ্চিত করেছেন নেইমার, কাসেমিরো ও রিচার্লিসনকে। ব্রাজিল লিড নেয় নেইমার জাদুতে । বামপ্রান্ত দিয়ে দারুণভাবে ডি বক্সে ঢুকে পড়েন নেইমার। তিন ডিফেন্ডারকে পায়ের কারুকাজে পরাস্ত করে মাইনাস বাড়ান লুকাস পাকুয়েতার উদ্দেশ্যে। অরক্ষিত পাকুয়েতা লক্ষ্যভেদ করতে ভুল করেননি। জাতীয় দলের হয়ে পঞ্চম গোল অলিম্পিক লিঁও মিডফিল্ডারের। ব্রাজিলের জার্সিতে প্রথমবার টানা দুই ম্যাচে গোলের দেখা পেলেন তিনি। আসরে তৃতীয় অ্যাসিস্ট করেন নেইমার। চিলির বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের জয়সূচক গোলটি এসেছিল পাকুয়েতার পা থেকেই।
বিরতির পর খোলস ছেড়ে বেরোয় পেরু। দেশের মাটিতে কোপা আমেরিকায় ব্রাজিলের সর্বশেষ পরাজয় এই পেরুর বিপক্ষেই, তা সেই ১৯৭৫ সালে। দ্বিতীয়ার্ধে পেরু সেই স্মৃতি ফিরিয়ে আনার কাছাকাছি পৌঁছেও গিয়েছিল। পেরুর দারুণ দুটি প্রচেষ্টা থামিয়েছেন ব্রাজিল গোলরক্ষক এডারসন। ব্রাজিলের হয়ে আগের ছয় প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে অরক্ষিত রেখেছিলেন গোলপোস্ট। সপ্তম ম্যাচে দারুণ দুটি সেভে ব্রাজিলের ফাইনাল নিশ্চিতে বড় অবদান ম্যানচেস্টার সিটি গোলরক্ষকের।