প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের অধীনে দক্ষিণখান অফিসে কর্মরত তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী এস এম সাইফুল ইসলাম ওরফে টিপু ভূয়া রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে দরপত্র নিয়ন্ত্রণ ও চাঁদাবাজীর মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। উর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে কর্মচারী কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পান না। সরকারী চাকুরী বিধিমালার নিয়ম-নীতি সব টিপুর জন্য শীথিল বলে অভিযোগ করেন কয়েকজন ঠিকাদার। তারা আরো জানায়, মাদক সেবনের কারণে টিপুকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হলেও তার বিরুদ্ধে অফিস কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি,আবার টেন্ডার আহ্বান করার পর থেকে দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত টিপু বাহিনীকে পদে পদে দিতে হয় মোটা অংকের উৎকোচ।
বঙ্গবন্ধু প্রাণীসম্পদ উপসহকারী এসোসিয়েশনের নিজেকে স্ব-ঘোষিত সভাপতি হিসেবে দাবী করেন টিপু। এই এসোসিয়েশনের সভাপতি পরিচয় দিয়ে গোটা অধিদপ্তরকে তটস্থ রাখেন তিনি। অনুসন্ধানে জানা যায়,বঙ্গবন্ধু কল্যাণ ট্রাস্টের অনুমোদন ছাড়াই তিনি এই সংগঠনটি পরিচালনা করছেন। প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরে টিপু ও তার স্ত্রী তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে কর্মরত কিন্তু নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে তারা হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। চাকুরীর পাশাপাশী টিপু ঠিকাদারী ব্যবসা শুরু করেছেন।
তার সিন্ডিকেটের ঠিাকাদারগণ ভূয়া বিল ভাউচারে বা কাজ না করে বিল তুলে আত্মসাত করছেন বলে ঠিকাদারদরে পক্ষ থেকে অভিযোগ করেন। আর এই টাকার সিংহভাগ চলে যায় টিপুর পকেটে। আর এই অবৈধ দিয়ে বর্তমানে টোলারবাগে নিজস্ব ফ্ল্যাট করেছেন বলে দুর্ণীতি দমন কমিশনে জমাকৃত একটি অভিযোগ থেকে জানা যায়।
দুর্নীতি দমন কমিশনে তার অবৈধ সম্পদ ও চাঁদাবাজীর অভিযোগ জমা দেয়ার বিষয়টি টিপু জানতে পারলে দ্রুত তার বিভিন্ন সম্পত্তি বিক্রি করা শুরু করেন। জনৈক আজাদ হোসেনের নিকট টোলারবাগের একটি ফ্ল্যাট ৬০ লক্ষ টাকায় বিক্রি করেন। অন্য আরেকটি ফ্ল্যাট ৫০ লক্ষ টাকায় বিক্রি করেন বলে দুদকের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়। সাভারের ভাদাইলে ১০ কাঠা জমিতে টিনশেড বাড়ি র্নিমাণ করে ভাড়া দিয়েছেন।
একই মন্ত্রণালয়ের একজন সচিবকে ভাগ্নে,স্থানীয় সাংসদকে মামা আর দেশের একটি শীর্ষ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালীককে নানা পরিচয় দিয়ে টিপু দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর। কিন্তু এসব পরিচয়ের বাস্তবে কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরে টিপুর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য চাওয়া হলে এবিষয়ে কেউ কথা বলতে রাজী হননি। অভিযুক্ত টিপুর বক্তব্যের জন্য বিভিন্নভাবে যোগাযোগের চেস্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।