বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আজকে বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে একটা ভয়াবহ সময় অতিক্রম করছে। এতো কঠিন সময় এদেশে মানুষ কখনো অতিক্রম করেনি। বাংলাদেশকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিভাবে তার স্বাধীনতা-সারভৌমত্বকে হরণ করে, গণতন্ত্রবিহীন করে দিয়ে এখানে জনগণের অধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে।’
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে শনিবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে আমরা দুইটা দানবের হাতে পড়েছি। একটা দানব হচ্ছে- আমাদের এই সরকার; যারা আজকে অন্যদেশের স্বার্থ হাসিল করছে। আরেকটা দানব হচ্ছে- করোনাভাইরাস; সেটা শুধু আমাদেরই নয়, গোটা বিশ্বকে আক্রান্ত করছে। এর মধ্যে আমাদের দলকে, আমাদের সংগঠনকে টিকিয়ে রাখা, সংগঠনকে শক্তিশালী করা- এটা অবশ্যই আমাদের করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া আদায় করি যে, আমরা এখন পর্যন্ত আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয়ের নেতৃত্ব আমরা পাচ্ছি। আমরা আমাদের সমস্ত নেতৃবৃন্দকে ঐক্যবদ্ধ রেখে আমরা কাজ করতে পারছি এবং বাংলাদেশের জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। এতো অত্যাচার, এতো নির্যাতন-নিপীড়নের পরেও এখন পর্যন্ত বিএনপি থেকে কেউ চলে যায়নি। এটা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য আনন্দের সংবাদ।’
তিনি বলেন, ‘এই অবস্থার প্রেক্ষিতে আজকে আমাদের যেমন সবচেয়ে প্রয়োজন ছিল ইলিয়াস আলীর মতো সাহসী নেতাকে, সেই সময়ে আমরা তাকে পাচ্ছি না। আমি বিশ্বাস করি যে, ইলিয়াস আলী যে প্রজন্ম থেকে এসেছিলেন সেই প্রজন্মের পরের প্রজন্ম যারা আসবে তারা অবশ্যই বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করবার জন্যে, সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করবার জন্যে আরো বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবে।’
‘ইলিয়াস আলী আমাদের জন্য প্রেরণা’উল্লেখ করে দলের মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই নিখোঁজ হওয়া, গুম করে দেয়ার ঘটনা ইলিয়াস আলীকে দিয়ে শুরু হয়েছে এবং এটা করেই প্রথমে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী যে শক্তি সেই শক্তিকে দুর্বল করে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আপনারা একেক করে লক্ষ্য করে দেখবেন যে, আজকে বাংলাদেশের এই পরিস্থিতির জন্যে সম্পূর্ণভাবে আমরা যারা একটা পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি, আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাদেরকে কিন্তু একইভাবে নির্যাতন-নিপীড়ন করা হচ্ছে।
অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় আটক করে রাখা, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় নির্বাসিত করে রাখাসহ ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে সরকার ষড়যন্ত্র করছে।’
অবশেষে করোনা নেগেটিভ রিজভীর
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীবিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী
অবশেষে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী করোনা থেকে মুক্ত হয়েছেন। ষষ্ঠবারের টেস্টে তার নেগেটিভ রিপোর্ট আসে।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম রিজভীর করোনামুক্ত হওয়ার বিষটি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, রিজভীর শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে উন্নতি হওয়ায় ও করোনার নেগেটিভ রিপোর্ট আসায় তাকে আইসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে করোনা ইউনিটের অধীনে কেবিনে তার চিকিৎসা চলছে। তার অক্সিজেন স্যাচুরেশনের উন্নতি হয়েছে। তবে এখনও তাকে নরমালি অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। সবমিলিয়ে তার শারীরিক অবস্থা ভালো। তিনি স্বাভাবিক খাবার খেতে পারছেন। নিজে নিজে হাঁটা ও নড়াচড়া করতে পারছেন।
গত ১৬ মার্চ করোনা আক্রান্ত হন রুহুল কবির রিজভী। এরপরই ১৭ মার্চ তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গত ১ এপ্রিল হঠাৎ করেই রিজভীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে এবং অক্সিজেন লেভেল কমে গেলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছিল।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রুহুল কবির রিজভীসহ অন্যান্য অসুস্থ নেতাদের সার্বিক খোঁজ-খবর রাখছেন।
রুহুল কবির রিজভীর সুস্থতার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া কামনা করেছেন তার ব্যক্তিগত সহকারী আরিফুর রহমান তুষার।