করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চলে গেলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ও সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। নতুন বাংলা বছরের প্রথম দিন বুধবার দুপুর ২টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় (ইন্না লিল্লাহি…. রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এপ্রিলের শুরুতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন অধ্যাপক শামসুজ্জামান। একইসঙ্গে তার স্ত্রীও আক্রান্ত হন। দুজনই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ছিলেন। শামসুজ্জামানের শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় রোববার তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। তিনি স্ত্রী ও তিন মেয়ে রেখে গেছেন।
অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
শামসুজ্জামান খান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন। শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করা শামসুজ্জামান খান বিভিন্ন সময় মুন্সীগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজ, ঢাকার জগন্নাথ কলেজ, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন।সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (২০০১), একুশ পদক (২০০৯) এবং ২০১৭ সালে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যাজুয়েট ফোকলোরবিদ শামসুজ্জামান খান ১৯৪০ সালে মানিকগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৭ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবেও কাজ করেছেন। তিনি ২০১৯ সালে তিন বছরের জন্য বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি নির্বাচিত হন।
তার রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফোকলোর চর্চা, বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রচিন্তা ও বর্তমান বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলাপ ও অন্যান্য প্রসঙ্গ, মুক্তবুদ্ধি, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমকাল, বাঙালির বহুত্ববাদী লোকমনীষা, মীর মশাররফ হোসেন: নতুন তথ্যে নতুন ভাষ্যে, সৃজনভুবনের আলোকিত মানুষেরা, রঙ্গরসের গল্পসমগ্র, কিশোর রচনাসমগ্র, বাংলাদেশের উৎসব, বাংলা সন ও পঞ্জিকা, ফোকলোরচিন্তা ইত্যাদি।