বিএনপি কথামালার আড়ালে জনবিরোধী এক ধ্বংসাত্মক অপশক্তির পৃষ্ঠপোষক বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার সকালে সচিবালয়ে তার নিজ দপ্তরে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
যারা হত্যা ও ষড়যন্ত্রকে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে গ্রহণ করেছে তারাই দেশের এগিয়ে যাওয়ার পথে অন্যতম প্রধান অন্তরায় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বিএনপিই এদেশে সহাবস্থানের রাজনীতির পথে বাধা। বিএনপির ধ্বংসাত্মক রাজনীতি সহাবস্থানের পরিবেশকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে দিনের পর দিন। বিএনপি মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও তাদের অন্তরে ষড়যন্ত্র ও প্রতিহিংসা।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্রের চলমান অগ্রযাত্রায় প্রয়োজন দায়িত্বশীল বিরোধীদল। কিন্তু বিএনপি সেই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে অব্যাহতভাবে ব্যর্থ হচ্ছে।
‘সরকার স্বাধীনতার চেতনা ধ্বংস করছে’ বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন রেখে বলেন, ১৫ আগস্ট, ২১ আগস্ট কোন চেতনা? ভোটারবিহীন নির্বাচন, হ্যাঁ-না ভোটের নামে প্রহসন, এক কোটি ২৫ লাখ ভুয়া ভোটার সৃষ্টি, মাগুরার নির্বাচন, ১৫ ফেব্রুয়ারির জালিয়াতির নির্বাচন কী তাহলে স্বাধীনতার চেতনা? স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি, রাতের বেলায় কারফিউ গণতন্ত্র, আর সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে পৃষ্ঠপোষকতা দান করাও কী স্বাধীনতার চেতনা?
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদেশের কাছে দেশকে মর্যাদাহীন করা, সংখ্যালঘু নির্যাতন, হাওয়া ভবনের নামে আকণ্ঠ নিমজ্জিত দুর্নীতি চর্চা- এসব যদি বিএনপির স্বাধীনতার চেতনা হয়, তাহলে আমাদের বলার কিছু নেই। জন্মের পর থেকেই এসব চেতনাই বিএনপি ধারণ ও বাস্তবায়ন করে আসছে।
বিএনপি চেতনার মর্মমূলে রয়েছে স্বাধীনতার প্রতি আস্থার ঘাটতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়ে তারা আজ চেতনার কথা বলে! নির্লজ্জতারও একটি সীমা থাকে।
বিএনপি গণতন্ত্রকে পকেটবন্দি করেছিল উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে ২১ হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল বিএনপি। নৈরাজ্যের মাধ্যমে কেড়ে নিয়েছিল মানুষের অধিকার, আগুন সন্ত্রাস আর দুর্নীতিতে পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ছিল বিএনপির সেরা অর্জন।
‘জনগণ আওয়ামী লীগের বিচার করবে’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ নয়, এর মধ্যে অপরাজনীতির জন্য জনগণের আদালতে বিএনপির বিচার শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচন ও আন্দোলনে জনগণের প্রত্যাখ্যান তারই প্রমাণ। মিথ্যাচার আর অপরাজনীতির জন্যে ইতিহাসের কাঠগড়ায় এখন বিএনপি।
এর আগে সচিবালয়ে জার্মানির বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ফারেন হোলজ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে ওবায়দুল কাদের বলেন, দুদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশ হিসেবে জার্মানির সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে।
সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর মধ্যে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং জলবায়ু পরিবর্তনে যে আহ্বান জানিয়েছেন তাতে জার্মান সরকারের সমর্থন বাংলাদেশ কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছে।