তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি রাজনৈতিকভাবে বিরোধীদলের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ এবং তারা দেশে গুজব ও বিভ্রান্তি ছড়াতেই ব্যস্ত।’
তিনি রোববার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।
বিএনপি’র দেয়া আগামী কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘সরকারি দলের যেমন জনগণের কাছে দায়বদ্ধতা থাকে, বিরোধীদলেরও জনগণের প্রতি দায়িত্ব-দায়বদ্ধতা আছে। সেই দায়িত্ব তারা পালন না করে বরং জনগণকে বিভ্রান্ত করেছে, গুজব রটিয়েছে, যেটি অত্যন্ত দুঃখজনক। বিরোধীদলের দায়িত্ব পালন করতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা জনগণের জন্য কাজ করছি। আর তারা জনগণের জন্য কাজ না করে করোনা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, ছেলেধরা গুজব ছড়িয়েছে, এই করোনাকালে জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি বরং অপরাজনীতিতে লিপ্ত হয়েছে। সেটির প্রেক্ষিতে জনগণ যাতে বিভ্রান্ত না হয়, সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি। জনগণের রায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত দক্ষতার সাথে গত ১২ বছর ধরে দেশ পরিচালনা করছেন এবং সেই কারণে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর বছরে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে।’
‘বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কথায় তিনি কৌতুকবোধ করেন’ এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ড. হাছান বলেন, ‘বরং মির্জা ফখরুল সাহেবের কথাতেই আমরা এবং পুরো দেশবাসী কৌতুকবোধ করি। কারণ তিনি অবলীলায় অত্যন্ত সাবলীলভাবে অসত্য বলতে পারেন। তার প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলতে চাই, অসত্য বলায় যদি কোনো পুরস্কার দেয়া যেত, তাহলে মির্জা ফখরুল সাহেব সেটি নিশ্চিতভাবেই পেতেন।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ফখরুল সাহেব আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক সম্পর্কে কথা বলে আসলে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করেছেন, যা ঠিক নয়। রাজনীতিতে সমালোচনা হবে, তারা আমাদের রাজনৈতিক কর্মকান্ডের বা সরকারের সমালোচনা করবেন এটি স্বাভাবিক। কিন্তু আশা করবো যে, ব্যক্তিগত সমালোচনা করবেন না।’
এর আগে এদিন সকালে সচিবালয়ে তথ্যমন্ত্রীর সাথে তার দপ্তরে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন বাংলাদেশে নিযুক্ত আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত রাবাহ লারবি। এ বৈঠক সম্পর্কে ড. হাছান সাংবাদিকদের জানান, ‘আলজেরিয়া বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতিদানকারী দেশগুলোর অন্যতম। ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আলজেরিয়া সফর করেছিলেন এবং ১৯৭৪ সালে লাহোরে অনুষ্ঠিত ওআইসি সম্মেলনে যোগ দেয়ার জন্য আলজেরিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুমেদিন তিনি ঢাকায় এসে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের ইসলামাবাদে ওআইসি সম্মেলনে যাওয়ার শর্ত দিয়েছিলেন যে, পাকিস্তানকে অবশ্যই বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। এই স্বীকৃতি দেয়ার পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন।’
‘আলজেরিয়ার সাথে আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আছে এবং আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূতের সাথে সেখানে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, ওষুধ, চামড়া ও পাটজাত পণ্য এবং দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করেছি, সেইসাথে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত গণমাধ্যম ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা ও যোগাযোগ বৃদ্ধির যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তা আমরা ইতিবাচক বিবেচনায় এনেছি’, জানান তথ্যমন্ত্রী।