অবশেষে ভোগান্তি শেষ হচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের। নানা জটিলতার পর বিমানবন্দরে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের কার্যক্রম এখন শেষ পর্যায়ে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী শনিবার থেকে বিমানবন্দরে স্থাপিত ল্যাবেই বিদেশগামী যাত্রীদের করোনা পরীক্ষা চালু হতে পারে। পরীক্ষামূলক চালুর একদিন পরই এমন সিদ্ধান্তের কথা জানাল সরকার।
এরই মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষের দিকে। ১২টি মেশিনে দৈনিক সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা যাবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বৃহস্পতিবার বিকেলে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ল্যাব স্থাপন কাজ পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিমানবন্দরে আরটি পিসিআর ল্যাব বসানোর কাজ দ্রুততম সময়ে করার জন্য আমি নিজে গত পরশু দিন (মঙ্গলবার) এসে এখানে জায়গা নির্ধারণ করে দিয়ে গেছি। আশা করছি, আজ সন্ধ্যার মধ্যেই অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ করা সম্ভব হবে। এর মধ্যেই বেশ কয়েকটি মেশিনও চলে এসেছে। এ নিয়ে স্বাস্থ্য খাতের সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাই অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। সব ঠিক থাকলে আগামী পরশুর (শনিবার) মধ্যেই বিদেশগামী দেশের মানুষজন এই পিসিআর ল্যাবগুলো থেকে পরীক্ষা করে নির্বিঘ্নে বিদেশে যেতে পারবেন।
জাহিদ মালেক বলেন, এখানে দ্রুততম সময়ে পরীক্ষার জন্য র্যাপিড পিসিআর ল্যাব এবং সাধারণ পরীক্ষার জন্য আরটি পিসিআর ল্যাব উভয়ই কাজ করবে।
এর আগে গতকাল বুধবার পার্কিংয়ের জায়গায় অস্থায়ী একটি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করে নেগেটিভ আসা ৪৬ জনকে আরব আমিরাত পাঠানো হয়।
চলমান মহামারিতে ছুটিতে এসে দেশে আটকা পড়েন কয়েক হাজার আমিরাত প্রবাসী। কর্মস্থলে ফিরতে চাইলেও সম্প্রতি দেশটির দেওয়া যাত্রার ছয় ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরের ল্যাবে করোনা পরীক্ষার শর্তে আটকে যায় তাঁদের বিদেশযাত্রা। কিন্তু দেশের কোনো বিমানবন্দরেই নেই এমন সুবিধা।
পরে বিমানবন্দরে পরীক্ষাগার চালুর দাবিতে কয়েক দফা সংবাদ সম্মেলন থেকে শুরু করে আন্দোলনও করেন প্রবাসীরা। গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী এক সপ্তাহের মধ্যে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের নির্দেশ দেন। কিন্তু আমলতান্ত্রিক জটিলতা ও জায়গা নির্ধারণ নিয়ে বিমানবন্দর ও সংশ্লিষ্ট দুই মন্ত্রণালয়ের জটিলতায় আটকে যায় উদ্যোগ।
পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বাছাই করা সাত প্রতিষ্ঠানটি গত ১৫ সেপ্টেম্বর ল্যাব বসানোর অনুমোদন দেয় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। কিন্তু জায়গা নির্ধারণ নিয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলো মতপার্থক্য দেখা দেওয়ায় এত দিন এ কার্যক্রম মাঝপথে আটকে ছিল।