শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

বিমানবন্দরে বানকো সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক 
  • প্রকাশিত সময় : মঙ্গলবার, ২৯ জুন, ২০২১
  • ২৪১ পাঠক পড়েছে

বিনিয়োগকারীদের ‘সম্মিলিত গ্রাহক অ্যাকাউন্ট’ থেকে ৬৬ কোটি ৫৯ লাখ ১৯ হাজার ১৩৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বানকো সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান আব্দুল মুহিতকে দেশত্যাগের সময় আটক করেছে ইমিগ্রেশন পুলিশ।

মঙ্গলবার ভোরে তাকে রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক করা হয়।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার ভোরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশ ত্যাগ করতে চেয়েছিলেন বানকো সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান আব্দুল মুহিত। তবে বানকো সিকিউরিটিজের সব পরিচালকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছিল বিএসইসি। তারই আলোকে বানকো সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যানকে দেশত্যাগের সময় আটকে দিয়েছে ইমিগ্রেশন পুলিশ।’

এদিকে, ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) আব্দুল মতিন পাটোয়ারী বলেন, ‘ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী বানকো সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান আব্দুল মুহিতকে দেশত্যাগের সময় আটক করা হয়েছে। এখনও তাকে ইমিগ্রেশন পুলিশ আটকে রেখেছে। তবে, তাকে গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া চলছে। তাকে আটকের বিষয়ে বিএসইসি আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে।’

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউজ বানকো সিকিউরিটিজের (ট্রেক- ৬৩) বিনিয়োগকারীদের সম্মিলিত গ্রাহক অ্যাকাউন্টে থেকে ৬৬ কোটি ৫৯ লাখ ১৯ হাজার ১৩৩ টাকা ঘাটতি পাওয়া গেছে। এটিকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও শেয়ার আত্মসাত বলে মনে করে ডিএসই কর্তৃপক্ষ। তাই, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে অর্থ আত্মসাতের এই ঘটনায় বানকো সিকিউরিটিজ ও এর ৭ পরিচালকের বিরুদ্ধে সোমবার (১৪ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে মতিঝিল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে ডিএসই। পরের দিন মঙ্গলবার (১৫ জুন) সকালে মতিঝিল থানা অভিযোগটি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠায়।

ডিএসই প্রতারণামূলক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় ১৮৬০ সালের আইনের ৪০৬ ও ৪০৯ ধারায় অভিযোগ এনেছে। অভিযোগটি থানায় দায়ের করা হলেও এর সব কার্যক্রম খতিয়ে দেখবে দুদক।

এদিকে, অর্থ আত্মসাৎকারীরা যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে সেজন্য ডিএসইর অনুরোধে গত ১০ জুন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এছাড়া, ব্রোকারেজ হাউজটি যেন বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রি করতে না পারে সে বিষয়ে সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডকেও (সিডিবিএল) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ডিএসইর পক্ষে দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ৬ মে ও ৬ জুন বানকো সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের মাধ্যমে শেয়ারের লেনদেন নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হয়। পরে গত ৭ জুন কোম্পানিটিতে বিশেষ পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করে ডিএসই। ওই সময় ব্রোকারেজ হাউজটির সম্মিলিত গ্রাহক অ্যাকাউন্টে গত ৬ জুনের হিসাবে ৬৬ কোটি ৫৯ লাখ ১৯ হাজার ১৩৩ টাকার ঘাটতি পায় ডিএসই। ফলে তাৎক্ষণিকভাবে ডিএসই কোম্পানির কাছ থেকে ওই সম্মিলিত গ্রাহক অ্যাকাউন্টের ঘাটতির ‘গ্রাহকের পরিশোধযোগ্য সমন্বয়সাধন বিবরণ’ গ্রহণ করে। এতে প্রতীয়মান হয় যে, বানকো সিকিউরিটিজ ও তাদের মালিকপক্ষ বিনিয়োগকারীদের বিপুল পরিমাণ অর্থ ও শেয়ার আত্মসাত করেছে। এ অর্থ সমন্বয় না করেই তাদের দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কোম্পানিটির এমন কর্মকাণ্ড শেয়ারবাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। পাশাপাশি, সাধারণ বিনিয়োগকারীকে তাহাদের বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কিত করে তুলেছে।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, বিনিয়োগকারীদের বিশ্বাস ভঙ্গ করে তাদের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাত করে বানকো সিকিউরিটিজের পরিচালক ও কর্মকর্তা/কর্মচারীরা অপরাধ করেছেন। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ও শেয়ারবাজারের শৃঙ্খলার রক্ষায় ডিএসই বানকো সিকিউরিটিজসহ কোম্পানিটির চেয়ারম্যান আব্দুল মুহিত, পরিচালক মো. শফিউল আজম, ওয়ালিউল হাসান চৌধুরী, নুরুল ঈশাণ সাদাত, এ মুনিম চৌধুরী, জামিল আহমেদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৬ ও ৪০৯ ধারায় প্রতারণামূলক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অপরাধ করার অভিযোগ আনে।

 

নিউজটি শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © 2019-2020 । দৈনিক আজকের সংবাদ
Design and Developed by ThemesBazar.Com
SheraWeb.Com_2580