জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি বলেছেন, “পররাষ্ট্রমন্ত্রী কয়েকটি দেশ সফর করে করোনার টিকা না পেয়ে দেশে এসে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন। গণমাধ্যমের সামনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ধনী দেশগুলো নাকি বাংলাদেশকে টিকা দিতে রাজি হচ্ছে না, যদি তাই হয় তাহলে, বিশ্বে বাংলাদেশ বন্ধুহীন হয়ে পড়েছে।”
শনিবার দুপুরে রাজধানীর বারিধারায় দৈনিক যুগান্তর ভবন মিলনায়তনে জাতীয় যুব সংহতির এক সভায় তিনি এমনটাই মন্তব্য করেছেন।
বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “১৯৯৬ সালে পাসপোর্ট ভিত্তিক জরিপে বাংলাদেশের অবস্থান ছিলো ৯৬তম। একই জরিপে বাংলাদেশের অবস্থান নিম্নগামী হতে হতে বর্তমানে ১০৬তম অবস্থানে এসেছে। বিশ্বে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী পরিষদের মর্যাদা বাড়তে পারে কিন্তু সাধারণ মানুষের মর্যাদা মোটেই বাড়েনি, বরং কমেছে। তাই এখন বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে কেউ দেশের বাইরে গেলে তাকে নানা রকম হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “দলীয়করণের কারণে দেশে সুশাসন নেই। সরকারি দল না করলে, পরীক্ষায় প্রথম হয়েও চাকরি পাওয়া যায় না। সরকারি দল না করলে সর্বনিম্ন দরদাতা হয়েও টেন্ডারে কাজ পাচ্ছে না ঠিকাদাররা। আবার টেন্ডার ছাড়া কাজ দেওয়ার বিধান করেছে, যা সম্পূর্ণ সংবিধান পরিপন্থি। সরকারি দলের নেতাকর্মীরা অপরাধ করেও খালাস পেয়ে যায়, সবার জন্য আইন সমানভাবে প্রযোজ্য হচ্ছে না। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দেশ পরিচালনার সময়ে দেশে তুলনামূলকভাবে বেশি সুশাসন ছিল। জাতীয় পার্টির শাসনামলে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে ছিলো না। তাই দেশের মানুষ মনে প্রাণে জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিকল্প শক্তি হিসেবে প্রত্যাশা করছে। দেশের মানুষ আবারো জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায়।”
তিনি বলেন, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সকল জেলা কাউন্সিল সম্পন্ন করতে হবে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৮টি বিভাগীয় শহরে কর্মী সমাবেশ করা হবে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে বিভাগীয় শহরে জনসভা করা হবে। তখন জাতীয় পার্টি রাজনীতির রোডম্যাপ ঘোষণা করবে। প্রতিটি নির্বাচনে অংশ নেবে জাতীয় পার্টি। নির্বাচনের মাধ্যমে গণমানুষের কাছে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের উন্নয়ন ও সুশাসনের চিত্র তুলে ধরা হবে। নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সর্বাত্মক কাজ করতে হবে।
সবার প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধাচারণ করবে তাদের পার্টির শত্রু হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
সভার শুরুতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন তিনি। এসময় করোনা আক্রান্ত জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর রোগমুক্তি কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি বলেন, দেশের মানুষ আর আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায় না। দেশের মানুষ জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায়। জাতীয় পার্টি রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
জাতীয় যুব সংহতির আহবায়ক ও জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক সংসদ সদস্য এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ সভায় সভাপতিত্ব করেন।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় যুব সংহতি আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হেলাল উদ্দিন, মো. হেলাল উদ্দিন, মো. সাইফুল ইসলাম, শেখ সারোয়ার হোসেন, দ্বীন ইসলাম শেখ, ওয়াশির রহমান দোলন, হারুন আর রশিদ, নেয়াজ আলী ভূঁইয়া, শফিকুল ইসলাম দুলাল, মুশফিকুর রহমান, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. জসিম উদ্দিন, অ্যাডভোকেট মাঈন উদ্দিন মাঈনু, জিয়াউর রহমান বিপুল, মো. আঃ হান্নান, মিজানুর রহমান দুলাল, শরিফুল ইসলাম শরিফ, মাহমুদ আলম, জাফর আহমেদ রাজু, সাজিদ রওশন ঈশান, গাজী এম এ সালাম প্রমুখ।