পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারি বনজ সম্পদ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং বন সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ বাড়ানো হবে। পাশাপাশি বনের ওপর সরাসরি নির্ভরশীলতা কমাতে বনজ সম্পদ উজাড় রোধে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করা হবে। এতে বনাচ্ছাদন বাড়বে, বনের বাহিরে বৃক্ষাচ্ছাদন বাড়ার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হবে। ফলে অচিরেই দেশে বৃক্ষাচ্ছাদনের পরিমাণ শতকরা ২২ দশমিক ৩৭ ভাগ হতে ২৪ ভাগে উন্নীত করা সহজ হবে।
রোববার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের আওতায় প্রণীত ‘কমিউনিটি অপারেশনস ম্যানুয়াল’ চূড়ান্তকরণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী হাবিবুন নাহার, সচিব মো. মোস্তফা কামাল, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) আহমদ শামীম আল রাজী, যুগ্মসচিব সচিব (উন্নয়ন) জাকিয়া আফরোজ, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী এবং টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক গোবিন্দ রায় প্রমুখ।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, দেশের মোট ৮ টি বিভাগের ২৮ টি জেলার ১৬৭ টি উপজেলায় অবস্থিত ২৬টি বন বিভাগীয় কার্যালয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন সুফল প্রকল্পের মধ্য দিয়ে তিন ধরণের ল্যান্ডস্কেপে ৩২ ধরনের বনায়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সহযোগিতামূলক বন ব্যবস্থাপনা প্রবর্তনের মাধ্যমে ৫২ হাজার ৭২০ হেক্টর অবক্ষয়িত ও বৃক্ষশূন্য পাহাড়ি ও সমতল বনভূমির ল্যান্ডস্কেপে বনাচ্ছাদন বাড়ানো হচ্ছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী তৈরিতে উপকূলের ল্যান্ডস্কেপে ২৪ হাজার ৮৮০ হেক্টর ম্যানগ্রোভ বাগান সৃজন করা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল উন্নয়নে পশুখাদ্য ও ফলদ গাছ রোপণের মাধ্যমে ২০ টি রক্ষিত এলাকায় ২ হাজার ৫০০ হেক্টর বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল উন্নয়ন এবং ১ হাজার ৩৩০ হেক্টর করিডোর উন্নয়নের কাজ চলছে।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, এ সকল বনায়নের মাধ্যমে বনাচ্ছাদন বাড়ানোর এ উদ্যোগ সার্থক করার জন্য সহযোগিতামূলক বন ব্যবস্থাপনায় সম্পৃক্ত বন নির্ভর মোট ৪০ হাজার পরিবারের প্রত্যেককে সুফল প্রকল্প থেকে ৪২ হাজার টাকা ঘুর্ণায়মান জীবিকা উন্নয়ন তহবিল হিসাবে দেওয়া হবে। এছাড়া কমিউনিটিভিত্তিক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য প্রতিটি বন সংরক্ষণ গ্রামে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা কমিউনিটি উন্নয়ন তহবিল হিসাবে দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনীয় সংশোধন সাপেক্ষে অনুমোদন করা চার খণ্ডের কমিউনিটি অপারেশনস ম্যানুয়াল (COM) বন নির্ভর গ্রাম ও পরিবার নির্বাচন, সহযোগিতামূলক বন ব্যবস্থাপনা সংগঠণের কমিটি/সাব-কমিটি তৈরি, প্রশিক্ষণ প্রদান এবং জীবিকা উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা এবং বন নির্ভর জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক উন্নয়নে সঠিক দিকনির্দেশনা দেবে।