পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার বনাঞ্চল ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং বনায়ন কার্যক্রম জোরদার করেছে।
বৃহস্পতিবার আগারগাঁওস্থ বন অধিদপ্তরে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত ‘টেকসই বন ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, টেকসই বন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণের অংশ হিসেবে বনের অভ্যন্তরে বেআইনীভাবে বসবাসরতদের বনের বাইরে বের হয়ে আসতে হবে। পরিবেশ মন্ত্রী বনের অবৈধ দখল উচ্ছেদের মাধ্যমে বনভূমি পুনরুদ্ধার ও তা সংরক্ষণে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এ কে এম রফিক আহাম্মদ এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু প্রমুখ।
পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের উদ্যোগে বাংলাদেশে বনজসম্পদ সৃজন ও উন্নয়নে সূচিত হয়েছে এক নতুন গতিধারা, ফলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ভরে যাবে সবুজের সমারোহে। এই সবুজের অভীষ্ট লক্ষ্য টেকসই পরিবেশ উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, দৃঢ় অর্থনৈতিক ভিত নির্মাণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ মোকাবিলা করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য সুন্দর ‘পৃথিবী’ নির্মাণ।
বনমন্ত্রী বলেন, সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম এবং জনগণের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে বর্তমানে বাংলাদেশের বৃক্ষ আচ্ছাদিত ভূমির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দেশের মোট আয়তনের ২২ দশমিক ৩৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে এই বৃক্ষ আচ্ছাদিত ভূমির পরিমাণ ২৪ শতাংশের বেশি উন্নীত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বন-নির্ভর জনগোষ্ঠীর বনের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাসে বিকল্প জীবিকায়ন কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে তাদের জীবন-মান উন্নয়নে সহযোগিতামূলক বন ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে।
বন মন্ত্রী বলেন, বন্যপ্রাণি অপরাধ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে নিয়মিত অভিযান ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনার কারণে জনসচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় অপরাধ সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া মাত্রই আমরা দ্রুত সাড়া দিতে সক্ষম হয়েছি। সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে টেকসই বন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো।
অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৫০ টি টিয়া ও মুনিয়া পাখি প্রকৃতিতে অবমুক্ত করেন বনমন্ত্রী।
এছাড়াও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবেশ ভাবনা নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র, বাংলাদেশের পরিবেশ ও বন সংরক্ষণে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের কর্মকান্ডের উপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন এবং স্বাধীনতার ৫০ বছরে বন অধিদপ্তরের অর্জন ও সম্ভাবনা নিয়ে একটি উপস্থাপনা প্রদর্শন করা হয়।