বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

ব্যাংক পরিচালকের অনৈতিক সর্ম্পক, মুচলেকায় সমাপ্তি

আক্তারুজ্জামান রকিঃ
  • প্রকাশিত সময় : মঙ্গলবার, ১০ মে, ২০২২
  • ৩৯০ পাঠক পড়েছে

সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের এক যুগ্ম সচিব ও ব্যাংক পরিচালকের সঙ্গে ব্যাংকার স্ত্রীর অনৈতিক সম্পর্কের জেরে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন এক ভুক্তভোগী স্বামী। ঝুকিমুক্ত ভাবে শন্তিতে বসবাসের জন্য পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে জিডি করেছিলেন ভুক্তভোগী স্বামী।

গত ২৪ মার্চ ওই জিডি করেন ভুক্তভোগী স্বামী। যার নম্বর ১৮১৮। জিডিটি তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন উত্তরা পশ্চিম থানার উপ পরিদর্শক মাসুদা খাতুন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ মাসুদ রানা চৌধুরী। তিনি বাংলদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের যুগ্ম সচিব ও অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালক পদে রয়েছেন।

থানা ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, জিডির প্রেক্ষিতে ওই যুগ্ম সচিব থানা পুলিশের সহায়তায় দোষ স্বীকার করে ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজে লিপ্ত না হওয়ার প্রতিশ্রুতিতে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পের মাধ্যমে আপোষ নামা করেছেন। সেখানে ৬টি বিষয়ে তারা আপোষ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ‘আমরা উভয়ে রাষ্ট্রিয় গুরুত্বপূর্ন পদে বহাল থেকে সামাজিক শিষ্টাচার বর্হিভুত নিয়মিত আলোচনায় জড়িত হয়েছি।’

‘আমাদের উভয়ের নিজ নিজ পরিবার থাকা সত্ত্বেও আমরা যে ধরনের আলাপ-চারিতা করেছি গত নয় মাস যাবত, তা বন্ধুত্বের সম্পর্কের যে কোনো মাপকাটি আতিক্রম করেছে বলে প্রতিয়মান হয়েছে।’ ‘আমাদের বিবাহ বহির্ভূত এ ধরনের নিয়মিত আলোচনা উভয়ের পরিবারে ব্যাপক অশান্তি তৈরী করেছে। এ জন্য আমরা দুঃখিত, ব্যথিত ও অনুতপ্ত।’ এর আগে জিডিতে ভুক্তভোগী স্বামী উল্লেখ করেন, তার স্ত্রী একটি সরকারী ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার। রাজধানীর একটি শাখায় কর্মরত আছেন। মোহাম্মাদ মাসুদ রানা চৌধুরী তার স্ত্রীর সঙ্গে আনুমানিক গত ২০২১ সালের আগস্ট মাস থেকে বিবাহ বহির্ভূত অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পরেছেন। পরস্পরের মাধ্যমে যতটুকু তিনি জানতে পেরেছেন, মাসুদ রানা চৌধুরী একই ব্যাংকের পরিচালক পদে রয়েছেন।

মাসুদ রানা চৌধুরী ব্যাংকের পরিচালক হওয়ার কারণে হয়তো প্রভাব খাটিয়ে আমার স্ত্রীকে বাধ্য করতে পারেন এ ধরনের অনৈতিক সম্পর্কে জড়াতে। গত ২২ জানুয়ারি তাদের মধ্যকার এ অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি আমি জানতে পারি। এর পর ব্যক্তিগত ভাবে ও পারিবারিক ভাবে আমার স্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এই সকল আলোচনায় আমার স্ত্রী তার এই অনৈতিক সম্পর্কের বিষয় স্বীকার করে। যদিও স্ত্রীর মতে তা প্রাথমিক পর্যায় হিসেবে এবং গল্পগুজব করে সময় কাটানোর জন্য করেন বলে উল্লেখ করে। এর পর আমার স্ত্রী জানায় মাসুদ রানা চৌধুরীর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখবে না এবং তার সঙ্গে ফেইসবুক সহ সকল ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেবে। এরপর সে মাসুদ রানা চৌধুরীকে ফেইসবুক আইডিতে আনফ্রেন্ড করেছে।

কিন্তু এর পরও মাসুদ রানা চৌধুরী আমার স্ত্রীর সঙ্গে ফেইসবুক মেসেঞ্জার ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ করে তখন আমার স্ত্রীও মেসেজ বা মোবাইল কলের রেসপন্স করে (সারা দেয়)। জিডিতে ভুক্তভোগী স্বামী আরও উল্লেখ করেন, গত ৪ মার্চ এ বিষয়টি ফের আমার নজরে এলে স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করি। তখন সে দু:খ প্রকাশ করে। কিন্তু মাসুদ রানা চৌধুরী নিয়মিত আমার স্ত্রীকে মোবাইল ফোনে নক করতে থাকে। যদিও মোবাইলের কন্টাক থেকে মাসুদ রানা চৌধুরীর নম্বর মুছে দিয়েছে, ফেইসবুক ও মেসেঞ্জারে ব্লক করলেও তাদের দুজনের মধ্যে মোবাইলে যোগাযোগ অব্যাহত থাকে।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিষয়টি নিয়ে আমরা পারিবারিক ভাবে (আমার মেয়ে, স্ত্রী ও আমি) আবার অলোচনা করি। তখনও আমার স্ত্রী বলেছে আর কোনো মাধ্যমে মাসুদ রানা চৌধুরীর সঙ্গে আর কোনো মাধ্যমে কথা বলবে না এবং এখন থেকে পারিবারে প্রতি মনোযোগি হবে। কিন্ত পরে দেখা গেছে মাসুদ রানা চৌধুরী ফোনের মাধ্যমে স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেই যাচ্ছে। আমার স্ত্রীও তখন মাসুদ রানা চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। এ নিয়ে আমার স্ত্রীর সঙ্গে প্রায় প্রতিদিন আমার আলোচনা হলে সে ফোনে কথা বলার বিষয় অস্বীকার করে। অবস্থার উন্নতির পরিবর্তে এখন অবনতি হচ্ছে।

প্রতিদিন এ নিয়ে পরিবারে কলহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা যেহেতু তার (স্ত্রী) ও মাসুদ রানা চৌধুরীর মধ্যকার অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি জেনে গেছি, এতে আমার ছেলে, মেয়ে ও আমি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছি এবং তার এই বেপরোয়া যোগাযোগে আমরা ভীতসন্ত্রস্ত। এ অবস্থায় আমার ও আমার সন্তানদের জীবন হুমকির সম্মুখীন ও জীবন নাশের আশংকায় আছি। ভুক্তভোগী স্বামী বলেন, আমার দুটো বাচ্চা রয়েছে। স্ত্রীর এ ধরনের সম্পর্কে আমি মানসিক ভাবে বির্পযস্থ ।

জীবনের ঝুকিতে রয়েছি। থানায় জিডি করার পর অভিযুক্ত মাসুদ রানা তার ভূল স্বীকার করে থানায় বসে অঙ্গিকার নামায় স্বাক্ষর করেছে। জানতে চাইলে উত্তরা পশ্চিম থানার উপ পরিদর্শক মাসুদা খাতুন বলেন, বাদী ও বিবাদী বিষয়টি মিমাংসা করে ফেলেছে।’ এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে মোহাম্মদ মাসুদ রানা চৌধুরীকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা বলেন, স্যার মিটিংয়ে থাকতে পারেন তাই ফোন ধরছেন না।

নিউজটি শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © 2019-2020 । দৈনিক আজকের সংবাদ
Design and Developed by ThemesBazar.Com
SheraWeb.Com_2580