ভ্যাকসিন দেয়ার পর করোনায় আক্রান্তের শঙ্কা থাকলেও তা স্বাস্থ্যগতভাবে পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত বলে দাবি করেছেন চট্টগ্রামের একদল গবেষক। টিকা নেয়া অবস্থায় আক্রান্তদের শ্বাসকষ্ট যেমন থাকবে না তেমনি অতিরিক্ত অক্সিজেনেরও প্রয়োজন পড়বে না। প্রথম দফায় ভ্যাকসিন দেয়ার পর করোনায় আক্রান্ত ২০০ জনের ওপর গবেষণা শেষে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত তিন মাসে সিভাসু ল্যাবে ৬ হাজার ১৪৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে এক হাজার ৭৫২ জন করোনা পজেটিভ বলে শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ২০০ জন পাওয়া গেছে যারা ৭ ফেব্রুয়ারির পর করোনার প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছিলেন। গড়ে ভ্যাকসিন নেয়ার ৩২ দিনের মধ্যেই তারা আক্রান্ত হন।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ বলেন, করোনা হলেও আইসিইউ লাগেনি এবং অনেক ক্ষেত্রে হাসপাতালে যাওয়ার প্রবণতা কম ছিল। আমরা মনে করি, যারা ভ্যাকসিন নেননি তারা নেবেন।
গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্ত ২০০ জনের মধ্যে ৮২ দশমিক ৫ শতাংশ হারে ১৬৫ জনকে হাসপাতালেই আসতে হয়নি। বাকি ৩৫ জন হাসপাতালে গেলেও মারাত্মক কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি ছিল না। এমনকি ৮৮ দশমিক ৫ শতাংশ হিসাবে ১৭৭ জনের কোনো শ্বাসকষ্ট যেমন ছিল না তেমনি ৯২ শতাংশ হিসাবে ১৮৪ জনের অক্সিজেন প্রয়োজন হয়নি।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা দলের সদস্য প্রফেসর ড. শারমিন চৌধুরী বলেন, যারা টিকা দিয়েছেন তাদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হলেও তারা সিভিয়ার পর্যায়ে যাননি।
৯১ শতাংশ রোগীর কোনো রকম কাশি কিংবা হাঁচি ছিল না। সে সঙ্গে ৫৬ দশমিক ৬ শতাংশ রোগীর স্বাদ ও ঘ্রাণে কোনো পরিবর্তন হয়নি। আক্রান্ত সব রোগীরই অক্সিজেন স্যাচুরেশন ছিল ৯৭-এর মধ্যে। এ অবস্থায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত এবং ভারতের সেরামের মাধ্যমে পাওয়া এ টিকাকে অনেকটা নিরাপদ হিসেবে দেখছেন গবেষণা দলের সদস্য ডা. ত্রিদীপ দাশ।
প্রথম ডোজ নেয়ার পরও করোনায় আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়। ৪৮ বছর বয়সী এ ব্যক্তি আগে থেকেই কিডনি রোগে আক্রান্ত ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন সিভাসুর গবেষক দল। এ ছাড়া আক্রান্তদের অধিকাংশই আগে থেকে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিকের রোগী ছিলেন।