সংস্কৃতিমনা বাঙালি জাতির উৎসব হয়ে উঠেছে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার মঙ্গল শোভাযাত্রা। প্রতিবছর অসংখ্য মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে ঢাকার রাজপথ। তবে করোনা অতিমারির কারণে গতবছর থেকে অনিচ্ছুক ছেদ পড়েছে এই গণজমায়েতের। এবছরও এই ধারাবাহিকতায় হতে পারেনি সবার অংশগ্রহণে ঐতিহ্যবাহী এ উৎসব। সম্ভবও ছিল না। তবে অতিমারি অবস্থা ও লকডাউন বিবেচনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সীমিত পরিসরে প্রতীকী কর্মসূচির মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয়েছে নতুন বছরকে।
এ উপলক্ষে বুধবার সকালে চারুকলা অনুষদের শিল্পীদের তৈরি বিভিন্ন মুখোশ ও প্রতীক নিয়ে অনুষদ প্রাঙ্গণেই বাংলা নববর্ষ-১৪২৮ এর প্রতীকী মঙ্গল শোভাযাত্রা সংক্ষিপ্তভাবে আয়োজন করা হয়। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রতীকী এই শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেনসংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। এবছরের শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য ‘কাল ভয়ংকরের বেশে এবার ওই আসে সুন্দর’।
এই প্রতীকী মঙ্গল শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়াসহ চারুকলা অনুষদের স্বল্প সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। এসময় সবাই ‘ফেস শিল্ড’ দিয়ে বানানো বিভিন্ন মুখোশ পরে ও হাতে কাগজের ছোট টুকরাকে নানা আকারে কেটে বানানো শোভাবর্ধনকারী বড় আকারের মুখোশ হাতে ধরে রাখেন।
এ উপলক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সকলকে বাংলা নববর্ষেরআন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘আবহমান কাল থেকে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নেয়ার যে বর্ণিল উৎসব ও ঐতিহ্য, সেটি অসাম্প্রদায়িক, উদার ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন।নানা বিবেচনায় বাংলা-১৪২৮ গুরুত্ববহ একটি বছর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সন্ধিক্ষণে বাংলা নববর্ষের আগমন ঘটল।’ এছাড়াও কোভিড-১৯ উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে অত্যন্ত সীমিত পরিসরে বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানাতে প্রতীকী মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করায় চারুকলা অনুষদকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান ঢাবি উপাচার্য।
সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভূক্ত মঙ্গল শোভাযাত্রা। কিন্তু চলমান করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে এবছর পহেলা বৈশাখ উৎসবমূখর পরিবেশে উদ্যাপন করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা আশা করি আগামীতে করোনা উত্তর বাংলাদেশে আগের রূপে বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন করতে সক্ষম হবো। নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও সংক্ষিপ্তভাবে প্রতীকী এই মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজন করায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও চারুকলা অনুষদকে ধন্যবাদ জানান।