মিয়ানমারে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে আবারও নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালিয়েছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গতকাল বুধবার দেশটির বিভিন্ন নগর ও শহরে ৩৮ জন নিহত হয়েছে। পুলিশ ও সেনাদের গুলিতে নিহতদের মধ্যে চারটি শিশু বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। গত মাসে সেনা অভ্যুত্থানের পর শুরু হওয়া বিক্ষোভে গতকাল বুধবার একদিনে এত বেশি মানুষের মৃত্যু হলো।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিয়ানমারে বুধবারের দেশব্যাপী বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনী অনেক ক্ষেত্রে সতর্ক না করেই নির্বিচারে গুলি চালায়। এর আগে গত রোববার দেশটিতে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে গুলি ও সহিংসতায় অন্তত ১৮ জন নিহত হন।
মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাক্টিভিস্ট থিনজার শুনলেই গতকালের ঘটনায় বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘বীভৎস ঘটনা। এটা রীতিমতো হত্যাকাণ্ড। পরিস্থিতি বা অনুভূতি বর্ণনা করার ভাষা নেই আমার।’
নিউইয়র্কে অবস্থানরত মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শ্রেনার বার্গেনার বলেন, ‘গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে আজ ছিল রক্তাক্ততম দিন। আজ—কেবল আজ—একদিনে ৩৮ জন মানুষ নিহত হয়েছে। ক্যু শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত অর্ধশতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে, আর আহত হয়েছে অনেক।’
রয়টার্স জানায়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্রের কাছে দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।
মিয়ানমারে বুধবার সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে মোনায়া শহরে। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হন সেখানে। পাঁচজনের মধ্যে চারজন পুরুষ, অন্যজন নারী।
গত ১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারজুড়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এতে ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সামরিক শাসনের অধীনে থাকা দেশটির গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা রুদ্ধ হয়ে গেছে।
অভ্যুত্থানের পর থেকেই সামরিক শাসনবিরোধী গণতন্ত্রপন্থিরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছেন। আর, বিক্ষোভ দমনে সামরিক জান্তাও কঠোর অবস্থান নিয়েছে।