বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানীর ষড়যন্ত্র থেকে বিড়ি শিল্পকে বাঁচাতে বৃহত্তর রংপুর জেলা বিড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের আয়োজনে বিড়ি শ্রমিক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বেলা ১১ টায় রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। জনসভায় আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে বিড়ির উপর বিদ্যমান শুল্ক কমানো, বিড়ির উপর অর্পিত অগ্রিম ১০ শতাংশ আয়কর প্রত্যাহার, বিড়ি শ্রমিকদের সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং বিড়ি শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি প্রদানে দাবি জানান শ্রমিকরা।
জনসভা শেষে রংপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন শ্রমিক নেতারা। রংপুর জেলা (হারাগাছ) বিড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসনাত লাভলুর সঞ্চালনায় জনসভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি আমিন উদ্দিন(বিএসসি)। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান সফি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি এম. কে. বাঙালী এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান।
জনসভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি নাজিম উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক হারিক হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল গফুর, প্রচার সম্পাদক শামীম ইসলাম, বিড়ি শ্রমিক নেতা ছাদ আলী প্রমূখ। সভায় বক্তারা বলেন, “বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত, হতদরিদ্র, শারীরিক বিকলঙ্গ, বিধবাসহ লক্ষ লক্ষ শ্রমিক বিড়ি শিল্পে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। অথচ বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানীর ষড়যন্ত্রে দেশের প্রাচীন শ্রমঘন এ শিল্পটি আজ ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে। তারা এদেশের মানুষের ফুসফুস পুড়িয়ে বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাঁচার করছে।
একই সাথে ব্রিটিশ বেনিয়াদের দোসর ও নব্য মীরজাফর আত্মা এবং প্রজ্ঞা বিড়ি শিল্প ও শ্রমিক ধ্বংস করতে বিভিন্ন অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি বিড়ি শ্রমিকদের নিয়ে গবেষণার নামে তারা বহুজাতিক কোম্পানির সাজানো নাটকের মঞ্চায়ন করে মনগোড়া ফল প্রকাশের মাধ্যমে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। তাদের এই ষড়যন্ত্র বন্ধ করা না হলে আমরা শ্রমিকদের নিয়ে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো।” বক্তারা আরো বলেন, “বিদেশী সিগারেট কোম্পানীগুলোকে একচেটিয়া ব্যবসার সুযোগ করে দিতে কতিপয় অসাধু আমলা বিড়ির উপর ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মাত্রাতিরিক্ত করের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে।
বিড়ি মালিকরা এই মাত্রাতিরিক্ত করের বোঝা সহ্য করতে না পেরে কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে বিড়ি কারখানায় নিয়োজিত শ্রমিকরা কর্ম হারিয়ে বেকার জীবন যাপন করছে। কর্মসংস্থান না থাকাই পরিবার নিয়ে অনাহারে, অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। শ্রমিকদের কর্মরক্ষার্থে সরকারের কাছে আমরা বিড়ি উপর বিদ্যমান শুল্ক কমানোর জোর দাবি জানাচ্ছি।”