সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রাজধানীবাসীর অসহনীয় দুর্ভোগ লাঘব ও রাজধানীকে যানজট ও জনজটমুক্ত রাখতেই সরকার পাতাল রেল নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এই লক্ষ্যে স্পেনের টিপসা’র নেতৃত্বে জাপানের পেডিকো, বিসিএল এসোসিয়েটস, কেএসসি এবং বেটস-কে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বুধবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা শহরে পাতাল রেল (সাবওয়ে) নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শীর্ষক সেমিনারে এ পরিকল্পনার কথা জানান ওবায়দুল কাদের। সেমিনারে সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি।
পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ঢাকা পাতাল রেল নেটওয়ার্কের জন্য প্রাথমিকভাবে ১১টি রুটের এলাইনমেন্ট প্রস্তাব করেছে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, যার মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৪টি রুট প্রাথমিক ডিজাইন কাজের অন্তর্ভুক্ত। রুট ৪টি হলো- ঝিলমিল থেকে টঙ্গী পর্যন্ত প্রায় ২৯ কিলোমিটার, শাহকবির মাজার রোড হতে সদরঘাট পর্যন্ত প্রায় ২৩ কিলোমিটার, কেরানিগঞ্জ হতে সোনাপুর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হতে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ৪৮ কিলোমিটার।
ওবায়দুল কাদের আশা প্রকাশ করে বলেন, এই প্রকল্পটি নির্মাণের ফলে ঢাকা শহরের প্রায় ৮০ লাখ কর্মজীবী মানুষের মধ্যে ৪০ লাখ মানুষ মাটির নিচে স্থানান্তর হবে এবং মাটির উপরিভাগ যানজট ও জনজট মুক্ত হবে।
দেশের সবচেয়ে বড় মেগা প্রকল্প স্বপ্নের পদ্মাসেতুতে রেলওয়ে এবং সড়কপথের স্ল্যাব বসানোর কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত মূল সেতুর নির্মাণ কাজের অগ্রগতি শতকরা ৯২.৫০ ভাগ, নদী-শাসন কাজ শতকরা ৮০ ভাগ এবং প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৮৪.৫০ ভাগ। ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ শেষে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলেও জানান সেতুমন্ত্রী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল ইতিমধ্যেই প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ একটি টিউবের রিং প্রতিস্থাপনসহ বোরিং কাজ শেষ হয়েছে এবং এরই মধ্যে টিউবটির ২০০ মিটার রোড স্ল্যাব নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।
ঢাকা শহরে পাতাল রেল (সাবওয়ে) নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শীর্ষক সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন সেতু বিভাগের সচিব মোঃ বেলায়েত হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ৭ মার্চ, ১৭ মার্চ ঢাকাসহ সারাদেশে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ কি বিএনপি দেখতে পায় না? বিএনপি নেতারা স্বাধীনতার সুবর্ণ-জয়ন্তী পালনে জনগণের সম্পৃক্ততা দেখতে পায় না, তারা নিজেরা জন-বিচ্ছিন্ন বলেই জন-সম্পৃক্ততা দেখতে পায় না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি যেমন দেশের উন্নয়ন অর্জন দেখতে পায় না, তেমনি দেখতে পায় না নেতিবাচক রাজনীতির কারণে তাদেরকে জনগণের প্রত্যাখ্যান। সাম্প্রতিক পৌরসভা নির্বাচন এবং বিভিন্ন উপ-নির্বাচনে তা প্রমাণিত হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের সাথে সম্পর্কের সেতুবন্ধন তৈরি করেছে শেখ হাসিনা সরকার। অপরদিকে বিএনপি তৈরি করেছিলো অবিশ্বাসের কৃত্রিম দেয়াল। (বাসস)