রাজধানীর হাজারীবাগ রায়েরবাজার এলাকায় একটি বাসায় সাজেদা বেগম সাজু (১৮) নামের এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় স্বামী মাছ ব্যবসায়ী টিটু মিয়া পলাতক রয়েছে।
বুধবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে স্বজনরা অচেতন অবস্থায় সাজেদাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত সাজেদার বড় ভাই ফরহাদ হোসেন জানান, তারা হাজারীবাগ রায়েরবাজার টিলাবাড়ি ১৪১/২-এ নম্বর বাড়িতে থাকেন। আমাদের বাসার পাশে সাজেদা ১৪১/৩ নম্বর বাড়িতে স্বামীর সঙ্গে একটি টিনসেড দোতলা বাড়িতে থাকত। এক বছর আগেই তাদের বিয়ে হয়েছে। তাদের কোনো সন্তান নেই। রাতে বাসার পাশের ভাড়াটিয়া তানিয়া সেহরি খাওয়ার জন্য সাজেদাকে ডাকতে যায়। তখন রুমের দরজা খোলা দেখতে পায়। এরপর ঘরের ভিতরে বিছানার ওপর সাজেদাকে অচেতন অবস্থায় পরে থাকতে দেখে তানিয়া। তখন ঘরে ঢুকে টিটুকেও দেখতে পায়নি। পরে সাজেদাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
ফরহাদ আরো জানান, পরশু রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ঝগড়া ও মনোমালিন্য হয়। এরপর সাজেদা আমাদের বাসায় চলে আসে। গতকাল রাত ১১টার দিকে টিটু তাদের বাসায় গিয়ে সাজেদাকে বুঝিয়ে বাসায় নিয়ে যায়। আমাদের ধারণা টিটু বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে সাজেদাকে হত্যা করেছে।
আমার বোনের হত্যার বিচার চাই। টিটুকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই সবকিছু পাওয়া যাবে বলে জানান সাজেদার বড় ভাই ফরহাদ।
হাজারীবাগ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) কাউছার আহমেদ ভুইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানায়, ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারলাম, মৃত সাজেদা গত রাতে স্বামীর সঙ্গে বাসায় ছিল। রাতে সেহরি খাওয়ার জন্য পাশের বাসার ভাড়াটিয়া সাজেদাকে ডাকতে যায়। এমন সময় দেখতে পায় রুমের দরজা খোলা। ফ্যান চলছে, লাইট নিভান। অনেক্ষণ ডাকাডাকির পর না উঠলে, লাইট জালিয়ে দেখে সাজেদা অচেতন অবস্থায় বিছানায় পরে আছে। আশেপাশের অনেকেই রাত ১টার দিকে সাজেদার স্বামী টিটুকে বাসার সামনে সিগারেট খাইতে দেখে। তারপর থেকে তাকে আর পাওয়া যায়নি।
তিনি আরো জানায়, ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে মৃত সাজেদার সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করি। সাজেদার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। নাক দিয়ে ফুফরি উঠছিল। ধারণা করা হচ্ছে, সাজেদাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে পালিয়েছে স্বামী টিটু।
ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এই ঘটনায় টিটুর দুই ভাই ও এক বোন জামাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। আর টিটুকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান এসআই কাউছার আহমেদ।