রাজশাহী নগরীর নিউমার্কেট এলাকায় ১১ বছর আগে চাঁদার দাবিতে কলেজছাত্র রাজু আহমেদ হত্যা মামলায় পাঁচজনের ফাঁসির রায় দিয়েছে দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল আদালত। একই সঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও মামলার অপর নয়জন আসামিকে বেকসুর খলাস দেয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের বিচারক অনুপ কুমার এই রায় ঘোষণা করেন বলে জানান আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, রাজশাহী নগরীর দড়িখড়বোনা এলাকার আজিজুর রহমান রাজু, সাজ্জাদ হোসেন সাজু, মো. রিংকু ওরফে বয়া, দুর্গাপুর উপজেলার ব্রম্ভপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেন ও বাগমারা উপজেলার মাদারীগঞ্জ গ্রামের মাহাবুর রশীদ রেন্টু।
আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, নিহত রাজুর বাড়ি বাগমারা উপজেলার হাসনিপুর গ্রামে। মাদারীগঞ্জ বাজারে তার বাবা এসার উদ্দিনের একটি স্বর্ণের দোকান ছিল। আসামি মাহাবুর রশীদ রেন্টুর সঙ্গে রাজুর পরিবারের জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে মাহাবুর রশীদ রেন্টু তার সহযোগিদের নিয়ে রাজুর দোকানে গিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে রাজি না হলে স্বর্ণের দোকানে ভাংচুর চালায় রেন্টু ও তার লোকজন। এ ঘটনায় রাজু বাদি হয়ে মামলা করেন।
তিনি আরও জানান, মামলার পর আসামিদের হুমকিতে রাজু গ্রাম থেকে পালিয়ে রাজশাহী শহরে আশ্রয় নেয়। নগরের মন্নাফের মোড় এলাকায় এক বন্ধুর সঙ্গে মেসে থাকতেন তিনি। এর পর রাজুকে রাজশাহী শহরে হত্যার পরিকল্পনা করে ৩০ হাজার টাকায় চারজন ভাড়া করে রেন্টু।
তার পরিকল্পনায় ২০১০ সালে ১৫ মার্চ রাজুকে নিউমার্কে এলাকা থেকে প্রথমে অপহরণ করার চেষ্টা করে। এতে ব্যর্থ হয়ে সেখানে ছুরিকাঘাত করে রাজুকে হত্যা করে। সে সময় রাজু রাজশাহী জেলার দুর্গাপুরের দাওকান্দি ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। রাজু হত্যার ঘটনায় পরদিন তার বাবা এসার উদ্দিন বাদী হয়ে বোয়ালিয়া থানায় মামলা করেন।
এন্তাজুল হক বাবু আরও বলেন, এ মামলার ১৫ জন আসামি ছিলেন। এর মধ্যে একজন মারা গেছেন। ১৪ আসামির মধ্যে আদালত পাঁচজনের ফাঁসি ও নয়জনকে খালাসের আদেশ দেন। এ মামলায় ৫৮ জন সাক্ষী ছিলেন। আদালত ৩১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এ রায় ঘোষণা করা হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা সবাই আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণা শেষে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচজনকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।