রোজা ও লকডাউনের অজুহাতে আবারও বেড়েছে মুরগি ও ডিমের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম হালিপ্রতি বেড়েছে পাঁচ টাকা। আর লেয়ার এবং দেশি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০-৪০ টাকা পর্যন্ত।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘লকডাউনের’ কারণে মুরগি ও ডিমের সরবরাহ কমেছে, তাই দাম বেড়ে গেছে। ‘লকডাউন’ শেষে দাম কমতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।
বাড্ডা এলাকার কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ২৮ টাকা হালিতে বিক্রি হওয়া ফার্মের মুরগির ডিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৩২-৩৫ টাকা হালিতে। অর্থাৎ হালিতে দাম বেড়েছে পাঁচ টাকার বেশি। আর ৮৪ টাকায় বিক্রি হওয়া এক ডজন ডিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকায়।
বাড্ডার বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগি ১৬০-১৬৫ টাকা কেজিতে কেনাবেচা হচ্ছে। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১৫০-১৫৫ টাকা কেজিতে। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম ৫-১০ টাকা বেড়েছে। তবে বেশি দাম বেড়েছে লেয়ার মুরগির। রোজার আগেও ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া লেয়ার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০-২১০ টাকা কেজি দরে। আর পাকিস্তানি কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৩০-২৫০ টাকা কেজিতে।
এছাড়া সোনালী কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৫০টাকা কেজি দরে। অথচ রোজার আগেও এ মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৮০-৩২০ টাকা কেজিতে। অন্যদিকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে দেশি মুরগি, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৪৫০-৪৮০ টাকা কেজিতে।
মুরগির পাশাপাশি বাজারগুলোতে গরুর মাংস ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা কেজিতে। আবারও কোথাও কোথাও বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকা কেজি দরে।
বেড়েছে মাছের দামও। ২০০ টাকার কেজির রুই মাছের দাম ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে। আর ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ৯০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া শিং মাছ ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মধ্যবাড্ডা বাজারে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা মিনহাজ বলেন, বাজারে সব জিনিসের দাম বাড়তি। রোজা শুরু হওয়ার পর আরও বেড়েছে। তিনি বলেন, বিদেশি যে মুরগি গত সপ্তাহে কিনেছি ২১০ টাকা পিস, সেই মুরগি আজ ২৫০ টাকার নিচে দিচ্ছেই না।
তিনি বলেন, আমি ব্রয়লার মুরগি পছন্দ করি না। কিন্তু দাম শুনে ১৬০ টাকা কেজিতে ব্রয়লার মুরগি নিলাম। কী আর করা, না খেয়ে তো থাকা যাবে না।
মধ্যবাড্ডা বাজারের ব্যবসায়ী মনোয়ার হোসেন বলেন, রোজায় মুরগীর দাম ২০-৩০ টাকা বেড়েছে। তিনি বলেন, আমারা তো আর দাম বাড়াই না। কম দামে কিনতে পারলে, কম দামে বিক্রি করি। আর বেশি দামে কিনলে বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। আমাদের তো ব্যবসা করতে হবে।
কেন দাম বেড়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘লকডাউনের’ কারণে মুরগি আসছে কম। কিন্তু রোজায় দেশি-বিদেশি মুরগির চাহিদা বেশি। চাহিদার তুলনায় মুরগি কম থাকায় দাম বেড়েছে।
তিনদিন আগে একডজন ডিম কিনেছিলেন রবিউল ইসলাম। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এই ব্যক্তি ঢাকা পোস্টকে বলেন, রোজার একদিন আগেও ডিম কিনেছি ৮৪ টাকা ডজনে। আজ সেই ডিম কিনতে হচ্ছে ৯২ টাকা ডজনে। সব জিনিসের দাম বাড়তি।
মধ্যবাড্ডা পোস্ট অফিস গলির ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন বলেন, আমরা সবচেয়ে কম দামে পণ্য বিক্রি করি। এর চেয়ে কম দামে আর কোথাও পাবেন না। তিনি বলেন, ডিমের দাম বাড়তি। আমরা তো চাই কম দামে আনতে, কাস্টমারকেও কম দামে দিতে। দাম কম থাকলে বেশি বিক্রি হয়। আর দাম বেশি থাকলে কম বিক্রি হয়। বিক্রি কম হলে লাভও কম। ইচ্ছা করে তো আর আমরা দাম বাড়াই না।