লাভের জন্য গণপরিবহণগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
রোববার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ঘাটার চর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত বাসরুট রেশনালাইজেশনের আওতায় ‘বাসরুট পাইলটিং’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ জানান।
মেয়র বলেন, ঢাকায় ৯ হাজার ২৭টি গণপরিবহণ চলে। এগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা চলে। কেউ একটি গাড়ির মালিক, কেউ ৫০টির, কেউ আবার দুশো বাসের মালিক। সবার মধ্যে কমপিটিশন থাকে। সন্ধ্যার পর তারা প্রফিট (লাভ) খুঁজতে বসেন।
তিনি বলেন, প্রফিটের জন্য তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে। একটি বাস এসে দাঁড়ালে তার সামনে আরেকটি বাস আসে। ওই বাসটির পর আরেকটি বাস এসে দাঁড়ায়। এতে তুমুল কমপিটিশন তৈরি হয়। এভাবেই ঢাকা শহরে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয় এবং একটি বাসের সঙ্গে অন্য বাসের পাল্লায় দুর্ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে। আমাদের মধ্যে অনেক অকাল মৃত্যু হয়েছে। এখন থেকে দিন শেষে আর আয়ের হিসাবের জন্য প্রতিযোগিতা করতে হবে না।
নগরবাসীদের ফুটপাথ ও ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, আজ নতুন করে একটি বাস রুট চালু করছি। সেটি হচ্ছে কাটার ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার পথ। সেই পথে যে গাড়িগুলো চলবে তাদের সব নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। কোনো অভিযোগ থাকতে পারবে না।’
তিনি জানান, এই রুটের প্রতিটি বাসের কাগজপত্র ঠিক থাকবে। চালকের লাইসেন্স থাকবে। প্রতিটি হেলপারের নির্ধারিত পোশাক থাকবে। এই পথের প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া হবে দুই টাকা ১৫ পয়সা আর সর্বনিম্ন ভাড়া হবে ১০ টাকা। যাত্রীরা সুশৃংখলভাবে বাসে উঠবেন। ফলে আমরা মনে করি গণপরিবহণে শৃঙ্খলা ফিরবে।
মেয়র বলেন, আমরা যারা বাসরুট ফ্রেঞ্চাইজি পরিচালনা করছি, তারা সবাই মিলে মনে করছি আগামীর ভবিষ্যতকে একটি সুন্দর শহর উপহার দিতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। এটি নতুন একটি ধারণা বা ফর্মুলা, আমরা এটি বাস্তবায়ন করে ছাড়বো। ঢাকাকে বাঁচাতে হলে সবার আগে প্রয়োজন এটিকে সচল করা। আমার কথা শুনে অনেকেই বলতে পারেন- ঢাকা কি অচল হয়ে আছে? আমি বলবো, না ঢাকা অচল হয়নি। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্থবির হয়ে আছে। এই শহরের সবচেয়ে বড় সমস্যার নাম ট্রাফিক জ্যাম। জ্যামে মানুষ নাকানি-চুবানি খাচ্ছে। আমাদের কর্মজীবনের হাজার হাজার ঘণ্টা খরচ হচ্ছে। আমাদের এনার্জি নষ্ট হচ্ছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি সচিবালয় থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নিলীমা আক্তার, সংসদ সদস্য সাদেক খান, বিআরটিসি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ প্রমুখ।