সাতক্ষীরা ও বগুড়ায় অক্সিজেনের অভাবে রোগী মারা যাওয়ার ঘটনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করে জাতীয় সংসদে বক্তব্য রেখেছেন বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। একজন সংসদ সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে লজ্জাহীন উল্লেখ করে তার পদত্যাগও দাবি করেন।
শনিবার স্পিকার শিরীন শারমীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশনের সমাপনী দিনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এ সমালোচনা করেন তারা। এ সময় সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে ছিলেন। তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অধিবেশনকক্ষে দেখা যায়নি।
পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে প্রথমে বিএনপির সংসদ সদস্য জি এম সিরাজ বলেন, বগুড়ায় অক্সিজেনের অভাবে ২ দিনে ২৪ জন মারা গেছেন। কোভিডের জন্য নির্ধারিত ২৫০ বেডের মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে আইসিইউ বেড আছে আটটি। কিন্তু হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা আছে মাত্র দুটি। যে কারণে বাকি আইসিইউ বেড কোনো কাজেই লাগছে না।
বিরোধী দলের উপনেতা জি এম কাদের শুরুতেই বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বছর আগে যে অবস্থায় ছিল, এখনো সেখানেই আছে। কোনো উন্নতি হয়নি। আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ছয়-সাতবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। মন্ত্রীর সহকারীদের ফোন করার পর মন্ত্রীকে জানানোর কথা বলি। কিন্তু মন্ত্রী ফোন করেন না। ভারতের স্বাস্থ্যব্যবস্থা আমাদের চেয়ে ভালো। এরপরও তারা নাজেহাল হয়েছে। আমাদের দেশে ভারতীয় ভেরিয়েন্ট সেভাবে ছড়িয়ে পড়লে আশঙ্কা করার অনেক কারণ আছে।
বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ বলেন, গত বুধবার সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের মাধ্যমে গোটা হাউসকে অপমান করা হয়েছে। মন্ত্রী বলেছিলেন যে সাংসদেরা জেলা হাসপাতালের চেয়ারম্যান হলেও দায়িত্ব পালন করেন না। মন্ত্রীর এই বক্তব্য ঠিক নয়। এই বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করা দরকার।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, উনি (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) যে কী মানুষ… লজ্জা-শরম নেই। তিনি এক দিনও কোনো হাসপাতালের ভেতরে গিয়ে দেখেননি কী হচ্ছে, তিনি শুধু জুম মিটিং করেন। ৩৭টি জেলায় অক্সিজেন নেই। এক বছর মন্ত্রী কী করলেন?
জাপার কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, সাতক্ষীরায় অক্সিজেনের অভাবে এক ঘণ্টায় সাতজন ছটফট করে মারা গেলেন। আইসিইউ, এসডিইউতে রোগী গেলে কোনো চিকিৎসা হয় না। সেখানে কী হয়, কেউ জানে না। মানুষের মৃত্যুর কি কোনো দাম নেই? এসবের তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করুন।