ভূগর্ভস্থ পানির উপর নির্ভরশীলতা কমাতে সকল ক্ষেত্রে পানির অপচয় রোধ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমাদের যত নদী, পুকুর, খাল, বিল, হাওর রয়েছে, তার সবগুলোতে যেন নাব্যতা থাকে। সেগুলো খনন করে পানি ধারণক্ষমতা বাড়াতে হবে। এর ফলে পানির উপর নির্ভরশীল জীববৈচিত্র্য রক্ষা পাবে, মৎস্য সম্পদ বাড়বে, সেচকাজে ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমবে এবং ভূগর্ভস্থ পানিধারক স্তর রিচার্জ হবে। আজ সোমবার ‘বিশ্ব পানি দিবস ২০২২’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। রাজধানীর গ্রিন রোডে পানি ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মোট আয়তনের এক-তৃতীয়াংশ পানি সম্পদ। এদেশের মানুষের জীবন-জীবিকা আবহমান কাল ধরে পানিকে ঘিরে আবর্তিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু নিজেকে পানির দেশের মানুষ হিসেবে পরিচয় দিতেন। নদী ও মৌসুমি বন্যাকে তিনি জীবনেরই অংশ হিসেবে ভেবেছেন। কিন্তু নদীমাতৃক বাংলাদেশে আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নদী মরে গেছে। অপরিকল্পিত বাঁধ ও রাস্তাঘাট নির্মাণ, উজান থেকে নেমে আসা পলিমাটি, নদী ভাঙন ইত্যাদি কারণে আমাদের নদীগুলো ভরাট হয়ে গেছে। হারিয়ে ফেলেছে পানি ধারণ ক্ষমতা ও নাব্যতা। তাই আমরা ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীর গতিপথ ও নাব্যতা পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নিয়েছি।
তিনি বলেন, সেই সঙ্গে উপকূলীয় এলাকায় বাঁধ শক্তিশালী করা হচ্ছে। প্লাবনভূমির সঙ্গে নদীর সংযোগ স্থাপন করা হচ্ছে। বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে পরিবেশ ও প্রতিবেশ সুরক্ষায় নদীর তীর বরাবর বাফারজোন তৈরির উপর। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাতের সঙ্গে পানি নিরাপত্তার বিষয়টি নিবিড়ভাবে যুক্ত। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের ভবিষ্যৎ বিভিন্ন দৃশ্যকল্প বিবেচনা করে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা তৈরি করতে হয়। এ সময় পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলোতে প্রকৃতি নির্ভর ব্যবস্থাপনা কৌশল খুঁজে বের করতে হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।