সব ধর্মের মানুষের মিলিত রক্তস্রোতের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, এজন্য সব ধর্মের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুগান্তকারী নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন।
বুধবার রাজধানীর শাহবাগে শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে জাতীয় সম্মিলিত প্রতীকী শান্তি শোভাযাত্রা ও সম্প্রীতি উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। উৎসবটির আয়োজন করে বাংলাদেশ বৌদ্ধ সাংস্কৃতিক পরিষদ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সব ধর্মের মানুষের মিলিত রক্তস্রোতের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। আর স্বাধীনতার অন্যতম লক্ষ্য হিসেবে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি। সেকারণেই আমাদের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা বর্ণিত রয়েছে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে অনেক অপপ্রচার চালানো হয়। কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ প্রত্যেকে নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দল মনে করে, সবার আগে আমাদের পরিচয় আমরা বাঙালি। তারপর আমরা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান বা অন্যান্য ধর্মের অনুসারী। কিন্তু বাংলাদেশে এমন একটি পক্ষ আছে যারা ধর্মের পরিচয়কেই আগে রাখে। তারপর তারা বাঙালি না বাংলাদেশি এ নিয়ে সার্বক্ষণিক দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভোগে। সেখানেই তাদের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য।
তিনি আরো বলেন, দেশের সব ধর্মের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেমনি যুগান্তকারী নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন, তেমনি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ও সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়ানোর অপচেষ্টাও কঠোর হস্তে দমনে তার সরকার সবসময়ই বদ্ধপরিকর।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মানুষের মাঝে শান্তি-সম্প্রীতি-সাম্য প্রতিষ্ঠাই সব ধর্মের মূলমন্ত্র। আর বৌদ্ধ ধর্ম আরো একধাপ এগিয়ে সব জীবের কল্যাণে ব্রতী। আমরা যদি সবাই ধর্মের মর্মবাণী বুকে ধারণ করে অনুশীলন করি, তাহলে পৃথিবীতে এ হানাহানি-বিভেদ থাকতো না। বুদ্ধ পূর্ণিমার এদিনে সবাইকে নিজ নিজ ধর্মের মূলমর্ম বুকে ধারণ করে শান্তি-সম্প্রীতি-সাম্য প্রতিষ্ঠার ব্রত নেবার আহ্বান জানাই।
ধর্মীয় উৎসবগুলো আমাদের সংস্কৃতি ও কৃষ্টির অংশ হয়ে উঠেছে বর্ণনা করে ড. হাছান বলেন, বুদ্ধ পূর্ণিমা, দুর্গাপূজা, ঈদ, বড়দিনসহ সব ধর্মীয় উৎসবই এদেশের মানুষের অংশগ্রহণে সর্বজনীন রূপলাভ করে। এ সর্বজনীন সম্প্রীতির চেতনা, যা শেখ হাসিনা চিরজাগরূক রাখতে চান।
বৌদ্ধ সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতি ড. উত্তম কুমার বড়ুয়া সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ বড়ুয়ার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও আমন্ত্রিত অতিথিরা।