আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকার হঠানোর নামে বিএনপি যুদ্ধংদেহী মনোভাব দেখাচ্ছে। সেক্ষেত্রে জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় সরকার কঠোরভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে।
শুক্রবার জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় তার সরকারি বাসভবনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই তৎকালীন অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে বাংলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারকে অবরুদ্ধ করার অপপ্রয়াস চালায়। আজ ১১ জুন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সেই কারামুক্তির দিন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় আপোষহীন মনোভাব নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে শেখ হাসিনার যাত্রা শুরু হয়। জনগণের মুক্তি আন্দোলনে তাকে সহ্য করতে হয়েছে অনেক জেল-জুলুম ও অত্যাচার নির্যাতন। তিনি অসংখ্যবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন। কিন্তু জনগণের অকৃত্রিম ভালোবাসায় সকল রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশকে এগিয়ে নিতে অকুতোভয় নির্ভীক সেনানীর মত নিরবিচ্ছিন্নভাবে পথ চলেছেন।
তিনি বলেন, সকল বাধা-বিপত্তি জয় করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে স্বমহিমায় উজ্জ্বল। তিনি বাংলাদেশকে বিশ্বসভায় বিশেষ মর্যাদায় উন্নীত করেছেন তার যোগ্য নেতৃত্বে। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে।
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও সরকার হঠানো সংক্রান্ত বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আগে নিজেরা গণতান্ত্রিক হোন। রাজনীতি ও নিজ দলে গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন। গণতন্ত্র শুধু চাওয়ার বিষয় নয়, এটি চর্চারও বিষয়। এ ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য থেকে সরে এসে গণতান্ত্রিক ভাষায় কথা বলার জন্য বিএনপির প্রতি আহবান জানান তিনি।
বিএনপিকে আগামী নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার পরিবর্তনের একমাত্র পথ নির্বাচন। জনগণ যাদের নির্বাচিত করবে তারাই পরবর্তী সরকার গঠন করবে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি একটি ব্যর্থ বিরোধী দল। বিএনপি নেতৃত্বের সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থতা এবং হঠকারিতায় দলটির কর্মীরা আজ হতাশাগ্রস্ত। গত একযুগ ধরে প্রাণান্ত চেষ্টা করেও কর্মীদের মাঠে নামাতে পারেনি বিএনপি।
তিনি বলেন, ক্ষমতায় যেতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির নেতারা দলের কর্মীদের যুদ্ধের জন্য ডাক দিয়েছেন। তাদের এমন বক্তব্য একদিকে অগণতান্ত্রিক অন্যদিকে ফ্যাসিবাদী মানসিকতার পরিচয়। যুদ্ধের জন্য কর্মীদের এই ডাক দেওয়ার মধ্য দিয়ে বিএনপি নেতারা আবারও আগুনসন্ত্রাস ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির আভাস দিচ্ছেন কি-না- সেটা এখন ভেবে দেখার বিষয়। যদি তাই হয়, তাহলে এই আগুনসন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে জবাব দিতে জনগণ প্রস্তুত রয়েছে।
কাদের বলেন, বিএনপি মহাসচিব দেশের মাথাপিছু ঋণের বোঝা দেখেন। রাষ্ট্রের উত্তরণ ও সমৃদ্ধির কিছু দেখতে পান না। তারা দেশের অর্থনীতিকে পরনির্ভরশীল করে রেখে গিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই দুর্নামের বৃত্ত থেকে দেশকে অমিত সম্ভাবনাময় রূপ দিয়েছেন। পরিচিত করেছেন উন্নয়ন ও অর্জনের রোল মডেল হিসেবে।
তিনি বলেন, সরকারের অর্জনে বিএনপি ক্রমশ হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। তাইতো বিএনপি মহাসচিব শুধু ঋণই দেখতে পান, কিন্তু মাথাপিছু আয় দুই হাজার দুইশত সাতাশ ডলারে উন্নীত হওয়া দেখতে পান না। দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিও দেখতে পায় না বিএনপি।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের মুখে সদাসর্বদা মিথ্যাচার আর নেতিবাচকতা মানায় না। তাদের বক্তব্যে গভীর হতাশা ও দলীয় ব্যর্থতাই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বিএনপি দেশের কপালে পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের কলঙ্কতিলক পরিয়ে ছিলো।