আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সাংবাদিকদের স্বার্থ বিরোধী কোন কিছুই করবে না সরকার। শেখ হাসিনা সরকার সাংবাদিক বান্ধব উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণমাধ্যমের যে কোন বিষয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত সহানুভূতিশীল।
বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁর সরকারি বাসভবনে ব্রিফিং কালে সাংবাদিকদের আবারও ধৈর্য ধরার আহবান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের সুখে দুখে এবং গঠণমূলক সাংবাদিকতার পথ অনুসরণে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে আছেন বলেও জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সাংবাদিকরা পেশাগত কারণে বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করেন, তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অপ্রকাশযোগ্য তথ্য ছাড়া অন্যান্য তথ্য সংগ্রহের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু অভিজ্ঞ সাংবাদিক তথ্য সংগ্রহে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছেন তা সঠিক পদ্ধতি কিনা তা ভেবে দেখার বিষয়। গতকাল বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়,সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক এক পর্যায়ে নিজের ভুল স্বীকার করে মুখে মুচলেকা দেওয়ার কথাও বলেছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন চৌর্যবৃত্তি আর সাংবাদিকতাকে আমরা কি এক করে ফেলতে পারি?
তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য বের হওয়ার আগেই তার পক্ষে বা বিপক্ষে আন্দোলন কতটা যৌক্তিক, সেটাও সাংবাদিক বন্ধুদের ভেবে দেখার আহবান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, একজন অন্যায় করলে ঢালাও ভাবে সবাইতো সেজন্য দায়ী নন। সচিবালয়ে প্রতিদিন সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন এবং তথ্য সংগ্রহ করেন কিন্তু কেউ এভাবে লুকিয়ে ফাইলের ছবি তোলেন না বা নথি নিয়ে যায় না,সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক নিজেও ভুল স্বীকার করছেন।
আত্মস্বীকৃত একজনের ভুলের জন্য সাংবাদিক বন্ধুদের এমন অবস্থান গ্রহণ কেন? আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিকদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখেন।
কেউই আইনের উর্ধ্বে নন, আইন সবার জন্য সমান। যেহেতু বিষয়টি তদন্তাধীন তাই এনিয়ে কোন মন্তব্য করতে চান না বলে জানান ওবায়দুল কাদের। ইতিমধ্যে বিষয়টি তদন্তের জন্য ডিবিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তদন্ত কাজে সরকার কোনরূপ হস্তক্ষেপ করবে না বলেও জানান তিনি।
বিএনপি কাল্পনিক অভিযোগ আনলেও প্রকৃতপক্ষে সরকার দমন-পীড়নে বিশ্বাসী নয় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতারা প্রতিদিনই সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিষোদগার করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, সেজন্যতো বিএনপির কোন নেতাকে কোন প্রকার হেনস্তা বা গ্রেফতার করা হয় নি।
তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা সরকার গঠনমূলক সমালোচনাকে স্বাগত জানায় এবং স্বাধীন সাংবাদিকতা ও জনমতকে সম্মান করে, অপরদিকে বিএনপি জনমতকে উপেক্ষা করে বলেই নির্বাচনে গিয়ে দুপুরের আগেই সরে দাঁড়ায় এমনকি নির্বাচিত হয়েও সংসদে না গিয়ে জনরায়কে অপমানিত করে,অথচ তারাই এখন জবাবদিহিতার সবক দিচ্ছে।
শেখ হাসিনা সরকার অবাধ-তথ্যপ্রবাহ তথা গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন সরকারের উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক মনোভাবের কারনেই সাম্প্রতিককালে দেশে গণমাধ্যমের ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটেছে।
এর পরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দেশের সকল অঞ্চলের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে সেতু বিভাগের জন্য একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করতে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এবং নেতৃত্বদানকারী স্পেনের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান টিপসা’র সঙ্গে এক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
২৪৩ কোটি টাকার চুক্তিপত্রে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পক্ষে প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদৌস এবং নেতৃত্বদানকারী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান টিপসা এর অথরাইজড প্রতিনিধি রাফায়েলৈ ডেলগাডো জিমেনেজ নিজ নিজ পক্ষে স্বাক্ষর করেন।
এ সময় প্রধান অতিথি হিসাবে ওবায়দুল কাদের, সেতু বিভাগের সচিব মো. বেলায়েত হোসেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত স্পেনের মান্যবর রাষ্ট্রদূত ফান্সেসকো ডি আসিস বেনিটেজ সালাস ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান টিপসা’র সভাপতি এবং সিইও পাবলো বুয়েনো টমাস ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।