ব্যাংকিং খাতে সাইবার নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ৫৮টি ব্যাংকের মধ্যে ৩০টির মতো ব্যাংক লোকাল ব্যাংকিং সফটওয়্যার নিচ্ছে। বলতে গেলে, ৫০ শতাংশের বেশি ব্যাংকেই আমরা লোকাল সিকিউরিটি সার্ভিস দিতে পারছি। তবে আমরা একটি সাইবার সিকিউরিটি ইউনিট তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছি, যাতে দেশের বিভিন্ন জরুরি ক্ষেত্রে দক্ষ সাইবার সিকিউরিটি দিতে পারি। সাইবার সিকিউরিটির ইনডেক্স সাইটে আমরা বেশ কয়েক ধাপ এগিয়ে ৫৮তম অবস্থানে চলে এসেছি।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্যদের জন্য তৈরি অ্যাপসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
না জেনে, না বুঝে বিটকয়েনকে খারাপ বলা ঠিক হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, যুগে যুগে মুদ্রার পরিবর্তন হচ্ছে। এক সময় ছিল কড়ি দিয়ে আদানপ্রদান, এরপর সম্পদ আদানপ্রদান, এরপর টাকা, প্লাস্টিক কার্ডে বিনিময়, এরপর মোবাইল ওয়ালেট, ডিজিটাল ওয়ালেট ও ডিজিটাল কারেন্সি। বিটকয়েন, ডিজিটাল কারেন্সি এসব নিয়ে আমাদের গবেষণা করতে হবে। কেউ যদি বৈধ টাকা দিয়ে অবৈধ পণ্য কেনেন সে দোষ তো তার, টাকার নয়। টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে, অবৈধ লেনদেন হচ্ছে এটা বন্ধ করতে হবে। অনেক দেশ বিটকয়েনকে বৈধতা দিচ্ছে। অনেক দেশ নিষিদ্ধ করছে। আমরা এটি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করতে পারি, কী করা যায়। এটি নিয়ে আলোচনা করা দরকার। না জেনে, না বুঝেই এটাকে বাতিল না করি।
রাইড শেয়ারিং বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৪ থেকে ৫ বছর আগে যখন উবার বাংলাদেশে আসতে চাচ্ছিল, তখন আসার কোনো আইনগত কিংবা নীতিগত কাঠামো ছিল না। অপর দিকে পাঠাও যখন বাংলাদেশে শুরু করছিল, তখনও কিন্তু তাদের আইনগত ও নীতিগত কোনো প্রক্রিয়া ছিল না। সেখানে আমরা উবারকে আসতেও বাধা দেইনি, পাশাপাশি আমরা বিআরটিএর সঙ্গে কথা বলেছি, সরকারের সঙ্গে কথা বলেছি, বিদেশে কীভাবে রাইড শেয়ারিংগুলো চলছে সেটাও আমরা দেখার চেষ্টা করেছি। তাতে যেটি হয়েছে, তারা প্রথমে এসেছে, বাংলাদেশ থেকেও পাঠাও তৈরি হয়েছে। একই সময়ে আমরা একটি কৌশলপত্র তৈরি করেছি, তারপর নীতিমালা তৈরি করেছি। তারপর বিআরটিএর মাধ্যমে অনুমোদন হয়ে সেটি ধীরে ধীরে পরিবর্তন হয়েছে, আপডেট হয়েছে। এভাবে আমরা চালানোর চেষ্টা করছি। এর সঙ্গে জড়িত আছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এলজিআরডি মন্ত্রণালয়, ব্যাংকিং সেক্টরসহ অনেক খাত।
ই-কমার্স প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি আমাদের একটি নতুন সেক্টর। করোনার সময়ে ই-কমার্স ছিল আমাদের বাণিজ্যিক কার্যক্রমের লাইফলাইন। ২০১৮ সালে আমরা একটি ই-কমার্স নীতিমালা তৈরি করলাম, যদিও এটি আমাদের দায়িত্বের মধ্যে ছিল না। কিন্তু আমরা চিন্তা করেছি যে, আজ হোক কিংবা কাল হোক ক্ষেত্রটি বড় হবে, হাজার হাজার কোটি টাকা লেনদেন হবে।
আইসিটি খাতে নারীদের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে পলক বলেন, আইটিতে কোনো দেশেই নারীদের অংশগ্রহণ ১৫ শতাংশের বেশি নয়। আমরাও চেষ্টা করছি সেটি এগিয়ে নিতে। আমাদের ই-কমার্সসহ আইটি খাতে নারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। আমরা চেষ্টা করছি ২০৩০ সালের মধ্যে অন্তত ৩০ শতাংশ নারীদের অংশগ্রহণ যেনো থাকে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্যদের জন্য তৈরি অ্যাপসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউ সভাপতি মুরসালিন নোমানী, সঞ্চালক ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান খান।
এই অ্যাপস ব্যবহারের মাধ্যমে সংগঠনের সদস্যদের বার্ষিক ও কল্যাণ তহবিলের চাঁদা পরিশোধসহ ডিআরইউ’র বিভিন্ন সেবা নেওয়ার সুযোগ থাকবে।