মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল শোষণ-বৈষম্যহীন অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। কিন্ত স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শত্রু সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত রেখেছে। এরা সমাজকে কলুষিত করে বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর মৌলবাদী রাষ্ট্র বানাতে চায়। তাই যেকোনো মূল্যে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস নির্মূল অনিবার্য। আর এ জন্য সরকারকে বঙ্গবন্ধু শাসনামলে প্রণীত ১৯৭২ এর সংবিধান পুন:প্রবর্তন করতে হবে।
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদী মানববন্ধনে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা এসব কথা বলেন। যতোদ্রুত সম্ভব বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যাওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা। সম্প্রতি কুমিল্লা, নোয়াখালী, গাজীপুর ও রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপে হামলা, লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী সাংবাদিক মঞ্চ এই কর্মসূচির আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন সাংবাদিক মঞ্চের সমন্বয়ক আশীষ কুমার দে।
মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে কর্মসূচির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি শাহেদ চৌধুরী। বক্তৃতা করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম, সিনিয়র সাংবাদিক মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আহমেদ অটল, বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার হায়াৎ, সাংবাদিক নেতা শাহনাজ শারমিন, মানিক লাল ঘোষ, আজিজুল পারভেজ, নিজামুল হক বিপুল, হরলাল রায় সাগর ও অঙ্গীকার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর মুজিব।
বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপে হামলা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতবাড়ি লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতাকে দায়ী করে বক্তারা বলেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটবে তা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর আগেই জানা উচিত ছিল। এছাড়া কুমিল্লার ঘটনার পর প্রশাসন তৎপর হলে অন্যান্য স্থানে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতো না। বক্তারা আরো বলেন, রাষ্ট্রকাঠামোতে ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠিত করা না গেলে সমাজ থেকে সাম্প্রদায়িকতা নির্মূল হবে না। সে জন্য ১৯৭২ এর সংবিধানে ফিরে যেতেই হবে।