ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ নামের চলন্ত লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে মারজিয়া আক্তার নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এতে এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০। দগ্ধ হয়েছে কমপক্ষে শতাধিক মানুষ।
শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ১টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক সেলিনা আক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কিছুক্ষণ আগে জানতে পেরেছি হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা লঞ্চ দুর্ঘটনায় দগ্ধ মারজিয়া আক্তার নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরের ৭০ ভাগ পোড়া ছিল। মারজিয়াকে খুব সকালে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আজ শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) ভোররাত ৩টার দিকে লঞ্চটিতে আগুন লাগে বলে জানা যায়। ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের গাবখান চ্যানেলে এলে লঞ্চ থেকে কিছু যাত্রী নামতে পেরেছেন। যাত্রীরা জানিয়েছেন, অনেকেই লঞ্চ থেকে লাফিয়ে পড়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন। যাত্রীদের ধারণা, হতাহতের সংখ্যা অনেক। তবে কেউ এখনো নির্দিষ্ট করে কোনো তথ্য দিতে পারেননি। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলেও জানান ওই ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা।
লঞ্চের যাত্রী সাইদুর রহমান জানান, তিনি ঢাকা থেকে বরগুনা ফিরছিলেন। ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালের ঠিক আগে গাবখান সেতুর কিছু আগে লঞ্চের ইঞ্জিনরুমে আগুন লেগে যায়। এরপর সেই আগুন পর্যায়ক্রমে ছড়িয়ে পড়ে পুরো লঞ্চে। রাত ৩টা থেকে আগুন জ্বলতে থাকে। যাত্রীরা অনেকেই নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাঁতরে তীরে উঠতে পেরেছেন। অনেকে হয়তো পারেননি। লঞ্চে শিশু, বুড়ো, নারীসহ কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক যাত্রী ছিল।
বিদেশফেরত এই যাত্রী বলেন, পোড়া গন্ধ পেয়ে আমি ভিআইপি কেবিন থেকে বেরিয়ে এসে দেখি লঞ্চে আগুন লেগেছে। তখন আমার স্ত্রী, শ্যালক নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় নদী সাঁতরে তীরে উঠেছি। লঞ্চ ভাসতে ভাসতে কোথাও গিয়ে থেমেছে। তবে এটুকু বলতে পারছি, লঞ্চের কোনো অংশ পোড়ার বাকি নেই।
আগুনে পোড়া লঞ্চটিকে ভেসে যেতে দেখেছেন লঞ্চ থেকে নামতে পারা যাত্রীরা। এ রিপোর্ট লেখার সময় ভেসে যাওয়া লঞ্চের সর্বশেষ অবস্থা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আগুনে যারা দগ্ধ হয়েছেন, তাদের অধিকাংশকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।