স্কুলে গিয়ে কোনো শিক্ষার্থীর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবরের সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলীতে অগ্নিযুগের বিপ্লবী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের আবক্ষ ভাস্কর্যে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপমন্ত্রী এ কথা জানান।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের প্রথম নারী শহীদ প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের ৮৯ তম আত্মাহুতি দিবসে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে যান তিনি।
উপমন্ত্রী নওফেল বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ এখন কমেছে অনেক। আমরা একটা গাইডলাইন দিয়ে দিয়েছি, একদিনের বেশি করে কেউ যেন না আসে। করোনা সংক্রমণ তারা যে ঘরে থাকলে হতো না বা স্কুলে যাওয়ার কারণে হয়েছে এটার কোনো সত্যতা এখনো পর্যন্ত নেই। তারা স্কুলে না গেলেওতো অন্যান্য জায়গায়, আত্মীয় স্বজনের বাসায়, বিনোদনের জায়গায় সবখানে যাচ্ছিলেন। সুনির্দিষ্ট কিছু জায়গায় আমরা এটা দেখেছি। এটা হয়েছে। আমরা প্রিকশনের ব্যবস্থা নিয়েছি।’
উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘মাস্টারদা সূর্য সেন ও প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার থেকে শুরু করে ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবে অংশগ্রহণকারীদের কথা পাঠ্যপুস্তকে আনতে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের কাজ এখনো শেষ হয়নি। মূল শিক্ষাক্রম অনুমোদন দেওয়া হয়েছে মাত্র। এখন এই পর্যায়ে এসে সব পাঠ্যপুস্তকে তা সংযুক্ত করব।’
বিপ্লবীদের স্মৃতি স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিতে রেলমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘রেলওয়ের অনেক জায়গা জমি ব্যবসায়িক স্বার্থে লিজ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। বিপ্লবীদের স্মৃতি রক্ষার্থে কোনো প্রতিষ্ঠান যাতে করা হয়। রেলমন্ত্রী মহোদয়ের কাছে বিশেষভাবে আবেদন জানাব, ইতিহাস রক্ষায় রেলের জায়গায় কাজ যেন হয়। তাহলে আমরা চট্টগ্রামবাসী গর্বিত হব। সবাই সাদরে গ্রহণ করব।’
নওফেল বলেন, ‘ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানে মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারসহ চট্টগ্রামের যে বিপ্লবীরা আত্মাহুতি দিয়েছেন, তাদের কথা বিশ্ব মানব ইতিহাসে লেখা থাকবে। উনাদের কথা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু উনার ‘আত্মজীবনী’তে, ‘কারাগারের রোজনামচা’য় লিখেছেন। জাতির পিতা সেখান থেকে অনুপ্রেরণা এবং আন্দোলন-সংগ্রামের শক্তি পেয়েছেন। তিনি সেটা লিখেছেন।’
তিনি বলেন, ‘এই স্মৃতি অবশ্যই আমাদের ধরে রাখতে হবে। আগামীতে অপ-রাজনৈতিক শক্তির বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে প্রীতিলতা ও মাস্টারদার স্মৃতি এবং চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহে যারা অংশ নিয়েছেন তাদেরকে আমরা স্মরণ করব। তাদের সম্পর্কে জানব। আগামীতে চট্টগ্রামকে ঘিরে কেউ যদি কোনো অপরাজনীতি করে সেটার বিরুদ্ধে জবাব দিতে, লড়াই-সংগ্রামে আমরা তাদের জীবন থেকে শিক্ষা নিব।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু, রেলওয়ে শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সভাপতি লোকমান হোসেন এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শিবু প্রসাদ চৌধুরী, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূরুল আজিম রনি, বীরকন্য স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক মহিম উদ্দিন ও সদস্য সচিব লিটন চৌধুরী রিংকু, নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর ও যুগ্ম সম্পাদক সুজন বর্মন।
প্রীতিলতার ভাস্কর্যে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় ছাত্র ইউনিয়ন, শ্রমিক লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহসীন কলেজ ছাত্রলীগ, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগ, চান্দগাঁওসহ বিভিন্ন থানা ছাত্রলীগ, চট্টগ্রাম বিপ্লব ও বিপ্লবী স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ এবং বীরকন্যা স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটি।