সরকারি অনুদান পাওয়া স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমার তালিকা প্রকাশ করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। শেষ হতে যাওয়া ২০২০-২১ অর্থবছরে ১০টি ছবিকে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে।
শিশুতোষ শাখায় অনুদান পেয়েছে ‘জল পাহাড় আর পাতাদের গল্প’ ও ‘রূপালী আঁশ’। প্রামাণ্যচিত্র শাখায় অনুদান পেয়েছে ‘সোনার তরী’, ‘আমার নানুর বাড়ি’ ও ‘বিন্দু থেকে বৃত্ত।
মুক্তিযুদ্ধ শাখায় অনুদান পেয়েছে ‘যুদ্ধজয়ের কিশোর নায়ক’ ও ‘স্বাধীনতার পোস্টার’। সাধারণ শাখায় অনুদান পেয়েছে ‘হাওয়াই সিঁড়ি’, ‘ঝিরিপথ পেরিয়ে’ ও ‘শিরিনের একাত্তর যাত্রা’।
শিরিনের একাত্তর যাত্রার প্রযোজক দীপক চৌধুরী ও পরিচালক এমদাদুল হক খান। এই ছবির কাহিনীটা এরকম যে, ১৯৭১ সাল। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছে। পাকহানাদার বাহিনী শহরে আক্রমণ চালিয়েছে। নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে। জ্বালিয়ে দিচ্ছে শহরটিকে। হঠাৎ একদিন তাদের আক্রমণের শিকার হয় শহরেরই একটি এলাকা। ওই এলাকার বাসিন্দা বাইশ বছর বয়সী মেডিকেল কলেজের ছাত্রী জয়া। তার মা বছরখানেক আগে মারা গেছেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর বাবা নিখোঁজ হন। জয়াদের বাসার বিশ্বস্ত গৃহকর্মী সুলেখাবু। সে নিঃসন্তান ও স্বামী পরিত্যক্তা । কয়েকদিন আগে এ বাড়িতেই এসেছে পূর্বপরিচিত তেইশ বছর বয়সী সুমন। সে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র । এ বাসা থেকে উচ্চবিদ্যালয়ে পড়াশুনার সূত্রেই কদিন আগে আসা হয় তার। মূলত সুমনেরও ইচ্ছা মুক্তিযুদ্ধে যাওয়া। মিলিটারিদের আক্রমণ থেকে বাঁচতে নৌকায় সুলেখাবু, জয়া ও সুমন পালিয়ে গিয়ে গোপালপুর গ্রামে আশ্রয় নেয়। কারণ, ঐ গ্রামেই জয়ার পূর্বপরিচিত ধনাঢ্য গৃহস্থ মুনির সাহেব বসবাস করেন। কিন্তু মুনির আহমেদ আর আগের মতো নন। তিনি শান্তি কমিটির নেতা। তার আদর্শ পাকিস্তানের পক্ষে, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে। এদিকে মুনির সাহেবের সদ্যযুবতী একমাত্র মেয়ে শিরিন। শিরিনের সহযোগিতা ও সংস্পর্শে গ্রামের পরিবেশে জয়ারা খাপ খায়। কিন্তু তাদের মূল উদ্দেশ্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশ পালন করা। দেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করা, স্বাধীন করা।
জানতে চাইলে ‘শিরিনের একাত্তর যাত্রা’র রচয়িতা ও কাহিনীকার সাংবাদিক দীপক চৌধুরী জানান, আসলে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবি এদেশে কমই হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও চান এদেশে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবি বেশি বেশি হোক। এমন চলচ্চিত্র হোক যা পরিবারের সবাইকে নিয়ে উপভোগ করা যায়। সত্যিকারের ইতিহাস থাকে। আমাদের অর্থনীতির উপ-সম্পাদক ও কথাসাহিত্যিক দীপক চৌধুরী আরো জানান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ নিরপেক্ষভাবে পূর্নদৈর্ঘ্য বা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে সত্যিকার অর্থে মেধাবীরা যাতে অংশগ্রহণ করতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে কমিটি করে দিয়েছেন। বলতে গেলে ভালো কিছু করার জন্য তাঁর নিরপেক্ষ ভূমিকা ও আন্তরিকতার অভাব ছিলো না। আমার ‘শিরিনের একাত্তর যাত্রা’ প্রতিযোগিতা করেই টিকেছে।