শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

হঠাৎ ঢামেকে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান, ২৪ দালালের কারাদণ্ড

নিউজ ডেক্স:
  • প্রকাশিত সময় : বৃহস্পতিবার, ১০ জুন, ২০২১
  • ২১২ পাঠক পড়েছে

দালালদের দৌরাত্ম্য রোধে হঠাৎ করেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে ২৪ জন দালালকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার হয়। তাদের প্রত্যেককে ১ মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছেন অভিযান পরিচালনাকারী র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।

বৃহস্পতিবার  সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত প্রায় ৩ ঘণ্টার এ অভিযানে ম্যাজিস্ট্রেট, র‌্যাব ও হাসপাতালের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ঢামেক হাসপাতালে দালালচক্রের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

অভিযান শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালিত হয়। এই দালালরা ঢামেক হাসপাতালে আসা নিরীহ রোগীদের সরকারি হাসপাতালের চেয়েও কম খরচে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও খ্যাতনামা অধ্যাপকদের দিয়ে দ্রুত অস্ত্রোপচারের সুব্যবস্থা করে দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যেত।

হাতেনাতে গ্রেপ্তারের পর তারা সবাই অভিযোগ স্বীকার করেছেন বলে জানান তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢামেক হাসপাতাল-১,২ এবং বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটকে ঘিরে সংঘবদ্ধ দালালচক্র গড়ে উঠেছে। কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এ দালাল চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন ছোট বড় ও নামসর্বস্ব হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্ড, স্লিপ প্যাড ইত্যাদি নিয়ে ঢামেকের জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ, ওটি, আইসিইউ, ওয়ার্ড এবং কেবিনের আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা নিরীহ, দরিদ্র ও অসহায় যাদের বেশিরভাগ গ্রাম থেকে আসেন, চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে কিছুই জানেন না তাদেরকে টার্গেট করে আপনজনের মতো ব্যবহার করে কম খরচে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অস্ত্রোপচার করিয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখায়। অনেক সময় জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগ থেকে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে যায় এসব দালালরা। আবার তারা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরেও রোগীদের টার্গেট করে। বিশেষ করে অস্ত্রোপচারের জন্য অপেক্ষমান রোগীদের কাছে গিয়ে অল্প টাকায় ভাল অধ্যাপক দিয়ে দ্রুত অস্ত্রোপচারের প্রলোভন দেখায়। অনেক সময় না বুঝে ফাঁদে পা দিয়ে তাদের সঙ্গে বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে কম টাকা জমা দিয়ে ভর্তি হয়ে ফেঁসে যান। নানা উসিলায় রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয় বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

ঢামেক হাসপাতালে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এসব দালালরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরে দ্রুত রিপোর্ট করিয়ে দেয়ার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে থাকে। ঢামেক হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক ও নার্স জানান, এ সব দালালদের কারণে ঠিকমতো কাজও করা যায় না।

অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা এ দালালচক্রের পরোক্ষ পৃষ্ঠপোষক। দালালচক্রের কাছ থেকে নিয়মিত কমিশন নিয়ে হাসপাতালে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ করে দেন তারা।

তবে অভিযানের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দালালদের সঙ্গে হাসপাতালের কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযানকে স্বাগত জানালেও কেউ কেউ বলছেন, দালালচক্রের চুনোপুঁটিরা ধরা পড়েছে। এদের মূল পৃষ্ঠপোষক কেউ ধরা পড়েনি।

 

 

নিউজটি শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © 2019-2020 । দৈনিক আজকের সংবাদ
Design and Developed by ThemesBazar.Com
SheraWeb.Com_2580