সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার। সঙ্গে বাড়ছে জনগণের অবহেলা ও উদাসীনতা। এমতাবস্থায় চলমান এক সপ্তাহের লকডাউনে জনগণের উদাসীন মানসিকতার কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় সরকার জনস্বার্থে আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনের বিষয়ে সক্রিয় চিন্তা-ভাবনা করছে।
শুক্রবার সকালে নিজ সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংকালে এসব কথা জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আন্দোলন-সংগ্রামে ব্যর্থ হয়ে লন্ডনের নেতৃত্বকে খুশি করতে এবং কর্মীদের রোষাণল থেকে বাঁচতে আইসোলেশন থেকে হাঁক-ডাক ছাড়ছে বিএনপি। তাদের এসব হুমকি ধামকি আষাঢ়ের তর্জন-গর্জন সার।’
তিনি বলেন, ‘রাজনীতিকে বিএনপি জনগণের দ্বারপ্রান্তে থেকে তুলে এনে এখন আবাসিক রূপ দিয়েছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘করোনার এই সময়ে আওয়ামী লীগের কর্মীরা দলের পক্ষে অসহায় মানুষের পাশে থেকে সহযোগিতা করছে, তৃণমূলে পৌঁছে গেছে সরকারি সহায়তা। অন্যদিকে বিএনপি দরজা-জানালা বন্ধ করে লিপ সার্ভিস দিচ্ছে, আর করে যাচ্ছে কাল্পনিক অভিযোগ।’
যখন যে ইস্যু সামনে আসে তা নিয়ে বিএনপি রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টা করে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পরাশ্রয়ী আন্দোলন এবং গোপন ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আরোহনের দিন শেষ হয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার প্রতি জনগণের আস্থা রয়েছে, আর সেটাই শেখ হাসিনা সরকারের মূল শক্তি। জনগণ ভালো করেই জানে বিএনপি ক্ষমতায় আসা মানেই দেশ আবারও অন্ধকারে তলিয়ে যাওয়া।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ধর্মের দোহাই দিয়ে, ধর্মকে ঢাল বানিয়ে জনগণের সম্পদ বিনষ্টের অপচেষ্টা আর সহ্য করা হবে না। এ দেশের মুসলমানরা কোনো অপশক্তি বা ধর্মব্যবসায়ীদের কাছে তাদের ধর্মবিশ্বাস ইজারা দেয়নি।’
কতিপয় স্বার্থান্বেষী ও উচ্চবিলাসী লোকের স্বপ্নপূরণে দেশকে অস্থিতিশীল করার যে কোনো অপপ্রয়াস জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকার কঠোর হাতে দমন করবে বলেও হুঁশিয়ার করেন ওবায়দুল কাদের।
উন্নয়নশীল দেশগুলোর অভিন্ন প্লাটফর্ম ডি-৮ এর আগামী দুই বছরের জন্য সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগ ও জনগণের পক্ষে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ অর্জন শেখ হাসিনার নেতৃত্বের স্বীকৃতি। এ অর্জন দেশের মানুষের অর্জন। শেখ হাসিনার সাফল্যের মুকুটে আরও একটি সোনালী পালক যুক্ত হলো।’
করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষপটে বেশ কয়েটি নির্দেশনা দিয়ে গত ৩ মার্চ ‘লকডাউনের’ ঘোষণা দেয় সরকার। ওই ঘোষণা অনুযায়ী ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত লকডাউন কার্যকর থাকবে।
করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ২৯ মার্চ যে ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছিল, তাতে দোকানপাট-শপিংমল ও গণপরিবহন বন্ধের নির্দেশনাও ছিল।
এরই মধ্যে লকডাউনের তৃতীয় দিন থেকে মহানগরীতে গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে। দোকান খোলা রাখার দাবিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ চলছিল কয়েকদিন ধরেই। পরে বৃহস্পতিবার শপিংমল ও দোকান খোলার সিদ্ধান্ত হয়।