জাতীয় সংসদের হুইপ চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের আওয়ামী লীগের এমপি সামশুল হক চৌধুরী, আরও দুই এমপিসহ ছয়জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ জুন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত এ আদেশ দিয়েছেন। দুদক সূত্রে এই খবর জানা গেছে।
সূত্র জানায়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বেআইনী ক্যাসিনো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এই পর্যায়ে তারা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন- এমন গোপন খবরের ভিত্তিতে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা চেয়েছিল দুদক। বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া অন্য দুই এমপি হলেন, সুনামগঞ্জ-১ আসনের এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, ভোলা-৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন।
এছাড়া অন্য তিনজন হলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম প্রধান সাজ্জাদুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুল হাই ও ঢাকা ওয়ান্ডার্স ক্লাবের কর্মচারী আবুল কালাম আজাদ।
দুদক সূত্র জানায়, এর আগে ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সামশুল হক চৌধুরীসহ অভিযুক্তদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে। পরে বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা আসে- এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি নিতে হবে। তারই পরিপ্রেক্ষিত্রে পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে দুদকের আবেদনটি আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে আদালত থেকে ওই আদেশ জারি করা হয় গত ৭ জুন।
এটি কার্যকর করতে আদালত গত ১৩ জুন পুলিশের বিশেষ শাখায় আদেশের কপি পাঠায়। পরে বিশেষ শাখা থেকে আদেশটি দেশের সব বিমান ও স্থলবন্দরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
সংশ্নিষ্ট একটি সূত্র জানায়, গত কয়েক বছরে ক্যাসিনোকাণ্ডসহ অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনে হুইপ সামশুল হকের নাম উঠে এসেছে। তার সম্পদ এক হাজার ৫৪৬ শতাংশ বেড়েছে বলেও তথ্য পাওয়া গেছে। এর আগে ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর সামশুল হকের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে চিঠি দিয়েছিল দুদক।
দুর্নীতির অভিযোগে সামশুল হক চৌধুরী ছাড়াও তার পরিবারের সদস্যদের নাম উঠে এসেছে। তার ছেলে নাজমুল করিম চৌধুরী শারুনসহ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে।