বঙ্গবন্ধু স্মৃতি বিজড়িত টাঙ্গাইল বনবিভাগের দোখলা বন বিশ্রামাগারে চলছে গারো মেয়েদের নিয়ে আমোদ-ফুর্তি। ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা ফরেস্টার ইসমাইল হোসেন নিজেই কাজের অবসরে সুযোগ বুঝে প্রতিনিয়ত এই অপকর্ম চালিয়ে রেস্টহাউসটিকে একটি প্রমোদ কেন্দ্রে পরিণত করলেও দেখার কেউ নেই।
স্থানীয় একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে গত ৭০ এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু টাঙ্গাইলে নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে তার কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেলকে নিয়ে এই বন বিশ্রামাগারে একদিন রাত্রি যাপন করেছিলেন। সে থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা এই বিশ্রামাগারটিকে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি বিজড়িত বলে সম্মান প্রদর্শন করে আসছেন। সম্প্রতি এই দোখলা রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হবার পর ফরেস্টার ইসমাইল এহেন অপকর্ম অব্যাহত রেখেছে।
শুধু তাই নয় দুর্নীতিবাজ চরিত্রহীন এই ফরেস্টার যোগদানের পর থেকে সামাজিক বনায়ন এলাকাসহ অভয়ারণ্য থেকে কাঠ চুরি করতে সহযোগিতা, কাঠ পাচারে সহযোগিতা, বনভূমি বিক্রি করে বেদখল করা, সুফল বাগানের সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করে টাকা আত্মসাৎ সহ বিভিন্ন অবৈধ পন্থায় দু-হাতে অবৈধ উপার্জন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মোটা অংকের অবৈধ উপার্জনের সুযোগ থাকায় তিনি ড্যামকেয়ার ভাব প্রদর্শন করে বন বিশ্রামাগারটিকেও অপবিত্র করতে দ্বিধা করছেন না।
ব্যক্তিগত জীবনে এই বন কর্মকর্তা কয়েকটি বিয়ে করেছেন। ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলাধীন বাবেধরা গ্রামের বাড়িতে বড় স্ত্রী, তার সাথে থাকেন এক স্ত্রী। তা ছাড়া ধর্ম পত্নী হিসেবে অনেককে তিনি ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ইতিপূর্বে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বিভাগে ও বান্দরবানের কর্মরত থাকাকালীন তিনি বনের কাঠ পাচার, চোরাই কাঠ ভর্তি যানবাহন ধরে অবৈধ পন্থায় কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছেন।
গ্রামের বাড়িতে বিলাসবহুল বাড়ি, নিজ জামাতাকে মোটা অংকের টাকা বিনিয়োগ করে বিদেশে চাকরি দিয়ে পাঠানো সহ বিয়ে অনুষ্ঠানে ৫০ লাখ টাকা ব্যায়। জামাতা ও দুই ছেলেকে একই দিনে তিনটি দামি মোটরসাইকেল কিনে দেয়া সহ বিলাসী জীবন যাপন করে আসছেন। চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বড়দোয়ার এ প্রায় দেড় বছর কর্মরত থাকাকালীন রেঞ্জাধীন হলুদিয়া ষ্টেশনের পাশে বসবাসকারী সেনোয়ারা নামের এক মহিলার সাথে নিয়মিত দৈহিক সম্পর্ক করে তাকে রিজার্ভের জায়গায় বিল্ডিং করে দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
এতদসংক্রান্ত তার ছোট স্ত্রীর সাথে সেনোয়ারার সাথে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি জিডি এন্ট্রি হয়। অন্যদিকে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এ রুজুকৃত অভিযোগ তদন্তাধীন থাকায় তাকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগ থেকে কেন্দ্রীয় সার্কেলে বদলি করা হলে সেখান থেকে তাকে টাঙ্গাইল বন বিভাগে বদলী করলে লাহুড়িয়া বন বিটে তাকে নিয়োগ দেয়া হলেও তিনি অল্প দিনের মাথায় তদানীন্তন ডিএফওকে ম্যানেজ করে লোভনীয় দোখলা রেঞ্জে বদলী নিয়োগ লাভে সক্ষম হন। এরপর থেকেই শুরু হয় অনিয়ম, দুর্নীতি ও লাম্পট্য জীবনযাপন। বন বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন বলে এলাকাবাসী মনে করেন।