দেশে মহামারি করোনা মোকাবেলায় সুস্পষ্ট ৫টি দাবি তুলে ধরেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সরকারের উদ্দেশ্য এই দাবি তুলে ধরেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
দাবিগুলো হলো, ১.প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জন্য সরকারি বিশেষ তহবিল থেকে ৩ মাসের জন্য ১৫ হাজার টাকা দেয়া।
২. মানুষকে মাস্ক পড়া নিশ্চিত করা এবং দেশের ৮০ ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনার একটি নির্দিষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করে তা জনসমম্মূখে তুলে ধরা।
৩.দেশে টিকা উৎপাদনের ব্যবস্থা করা।
৪.সারাদেশের হাসপাতালে যে রোগী রয়েছেন তাদের পুরোপুরি সেবা নিশ্চিতসহ অক্সিজেনের ব্যাবস্থা করা।
৫.সকল রাজনৈতিক দল, স্বাস্থ্য বিষেশজ্ঞ ও এনজিও কর্মীদেও সমন্বয়ে একটি পরামর্শ কমিটি গঠন করা।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, সরকারের উদানসীনতায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। প্রান্তিক মানুষের খাদ্য ব্যাবস্থা নিশ্চিত না করে লকডাউনের নামে মানুষকে ঘরে আটকে রাখা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
তিনি বলেন, নতুন করে প্রায় যে ২ কোটি ৪৫ লক্ষ মানুষের জীবিকা নির্বাহের পথ বন্ধ হয়ে গেছে তার দায় সরকারের। গত বছর বিএনপির দেয়া করোনা নিয়ন্ত্রণের রোডম্যাপের প্রতি সরকার গুরত্ব দেয়নি বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকারের ব্যার্থতায় করোনা পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে পড়েছে। তারা ঘোষণা দিয়েছিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের সব ধরনের ব্যাবস্থা রাখা আছে। অথচ কতোটা মূর্খ সরকার ও তাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হলে ঘোষণা দিয়ে করোনা হাসপাতাল বন্ধ করে দিয়ে চিকিৎসা ব্যাবস্থা শিথীল করে দিয়েছিলো।
তিনি আরও বলেন, দেশে এখনো ৩ থেকে ৪ ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে পারেনি সরকার। অথচ কি পরিমান টিকা মজুদ আছে এবং টিকা আমদানিতে কতোটা সম্ভাবনা রয়েছে কিংবা টিকা চুক্তির বিষয়ে কিছুই খোলাসা করছে না সরকার।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ক্ষমতাদখলকারী সরকার তাদের নিজস্ব অথনৈতিক মডেল তৈরি করেছে। যা মুক্তবাজার অর্থনীতির পরিপন্থী। এই মডেল একটি বিশেষ গোষ্ঠির হাতে চলে গেছে। যারা সরকারকে ক্ষমতায় আনার ব্যাপারে পর্দার আড়ালে কাজ করেছে। এখানে সাধারণ মানুষের সহায়তা পাওয়ার কোন সম্ভবনাই নেই।
ড. মঈন খান বলেন, সম্প্রতি বাজেট পেশ করার সময় একজন সাংবাদিক অর্থমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেছিলেন দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কতো? কিন্তু অর্থমন্ত্রী এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি। তাহলে প্রশ্ন হলো, যে দেশের অর্থমন্ত্রীর কাছে দারিদ্র মানুষের পরিসংখ্যান নেই সেই সরকার কিভাবে করোনা নিয়ন্ত্রণ করবে। তিনি বলেন, দেশের যে ৫ কোটি মানুষ দিন আনে দিন খায় তাদের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা ৩ মাসের খাদ্য সামগ্রীর ব্যাবস্থা করলে গরিব মানুষের ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে অনেকটাই কাজে আসবে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, সামাজিক নিরাপত্তায় সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য অর্থ সাহায্য কোন রিলিভ না। এটা তাদের অধিকার। সরকারের নৈতিক দায়িত্ব তাদের অধিকার বুঝে দেয়া। তিনি অভিযোগ করেন, বাজেটে সরকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জন্য যে ১০ ভাগ বরাদ্দ রেখেছে তার ভেতরে বিধবা পেনশন, বেকার ভাতা সহ অনেক সেক্টরের জনগনের বরাদ্দ সংযুক্ত করেছে। অথচ সরকারি কর্মকর্তাদের বিশেষ সুবিধার জন্য জন্য ৩০ ভাগ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এতেই বোঝা যায় দেশের গরিব মানুষেরা সরকারের নজরেই নেই।