মশার কোনো বর্ডার বা সীমানা নেই, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে আরো বেশি সচেতন হওয়ার কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। দু-এক জন মানুষের দায়িত্বহীনতার কারণে শহর বা গোটা দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন। আজ সোমবার স্থানীয় সরকার বিভাগের আয়োজনে সারাদেশে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশন ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দপ্তর/সংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনার ১০ম আন্তঃমন্ত্রণালয় অনলাইন সভায় সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, উত্তর সিটি করপোরেশনে মশা মারলে দক্ষিণ সিটি হবে না অথবা দক্ষিণে মারলে উত্তর হবে না এমনটি ভাবা উচিত হবে না। প্রতিষ্ঠান বা বাড়ি-ঘর যারই হোক, আমি-আপনি যেই হই না কেন আমরা সবাই এই শহর ও দেশের মানুষ। মশা নিধনে সবাইকে অর্পিত নাগরিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। সমন্বিত উদ্যোগে কাজ না করলে সুফল আসবে না।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস না করা গুরুতর অপরাধ। আর এই অপরাধের সাথে কেউ সম্পৃক্ত হলে তাকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা হবে। ইচ্ছাকৃতভাবে এডিস মশার প্রজননের জন্য দায়ী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে দুই সিটি কর্পোরেশনে চিরুনি অভিযানের অংশ হিসেবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, নির্মাণাধীন ভবনগুলোর বেজমেন্ট এবং ছাদে বিভিন্ন জায়গাতে জমা পানি থাকে। আর এখানেই এডিস মশার প্রজনন বেশি হয়। যারা ভবন নির্মাণ করছেন অথবা নির্মাণকাজ বন্ধ রেখেছেন বা যাদের পরিত্যক্ত ভবন রয়েছে তাদেরকে জমানো পানিতে লার্ভিসাইড অথবা সামান্য পরিমাণ কেরোসিন ঢালতে হবে।
ডেঙ্গু নিয়ে এখনও আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এডিস মশা বিস্তার বা প্রজননের সকল ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। এডিস, অ্যানোফিলিস বা কিউলিক্স মশা যে মশাই হোক না কেন এগুলো নিধনের জন্য কি করতে হবে তা সবারই জানা। করোনার মধ্যে যেন ডেঙ্গু মাথা ব্যথার কারণ না হয় সেটি লক্ষ্য রাখতে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেন তিনি।
প্রত্যেক ওয়ার্ডকে দশটি সাব জোন ভাগ করে কাউন্সিলরের নেতৃত্বে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে নিয়ে গঠিত কমিটিকে স্থায়ী রুপ দেয়ার পরামর্শ দিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘ত্রাণ বিতরণ, মশা নিধন, জলাবদ্ধতা নিরসন এবং দুর্যোগ-দুর্বিপাকসহ যেকোন সমস্যা দ্রুত সমাধানে এই কমিটিকে কাজে লাগানো সম্ভব।’
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা বা ঘাস কাটা বছর ভিত্তিক অথবা কোয়ার্টালি না করে নিয়মিত করার আহবান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রেলওয়ে, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এবং সিভিল এভিয়েশনসহ অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অধিক্ষেত্রে মশকের বিস্তার রোধে নিজ নিজ উদ্যোগে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দায়িত্ব পালনে অবহেলার কোন সুযোগ নেই।
সভায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ, গাজীপুর, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দপ্তর/সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।