টিকা নিয়ে বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগই অপরাজনীতি করছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সরকারের মন্ত্রী ও নেতাদের বক্তব্যের প্রতি ইংঙ্গিত করে শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, টিকা সংগ্রহ, সংরক্ষন ও বিতরণের কোনো বিজ্ঞান সম্মত বাস্তব সম্মত ব্যবস্থাপনা সরকার তৈরি করতে পারেনি। উপরন্তু দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহন করে অন্যান্য উৎস থেকে টিকা প্রাপ্তির সম্ভাবনাকে বিনষ্ট করেছে তারা।
বিএনপি মনে করে টিকা নিয়ে বিএনপি কোনো রাজনীতি করছে না। অপরাজনীতি করছে আওয়ামী লীগ সরকার। মিথ্যা ও ভুল তথ্য দিয়ে একদিকে জনগনকে প্রতারনা করছে অন্যদিকে জনগনকে চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তির মধ্যে ফেলেছে।
ফখরুল বলেন, সরকারের হিসাবেই দেখা যাচ্ছে ২ ডোজ টিকা পেয়েছেন মাত্র ৫২ লাখ মানুষ। প্রথম ডোজ পেয়েছে ১ কোটি ৫৩ লক্ষ। অথচ জনসংখ্যা প্রায় ১৮ কোটি। টিকা নিয়ে এই প্রতারণা অপরাধে শামিল। অবিলম্বে টিকা সংগ্রহে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে সমগ্র জনগোষ্ঠীকে টিকা প্রদানের জন্য প্রয়োজনে মেগাপ্রজেক্ট স্থগিত করে হলেও সাম্ভাব্য সকল উৎস থেকে টিকা সংগ্রহ করতে হবে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মান অক্ষুন্ন রেখে দেশে টিকা উৎপাদনের ব্যবস্থা গ্রহনের আহবানও জানান তিনি।
শনিবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। শুক্রবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো এই সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন মহাসচিব।
‘লকডাউন তুলে নেয়া আত্মঘাতি’উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় ডেল্টা করোনা ভাইরাসের মারাত্মক সংক্রমণ বৃদ্ধি অব্যাহত থাকা সত্বেও বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা করে লকডাউন শিথিল এবং ২দিন পরেই ১৯ তারিখ হতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যতিত সব কিছু খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে এই সিদ্ধান্ত আত্মঘাতি।
লকডাউন কেনো ফলপ্রসূ হয়নি তা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, বিএনপি বরাবরই বলে এসেছে ‘দিন আনে দিন খায়’ মানু্ষের খাদ্য নিরাপত্তা, নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে ক্যাশ ট্রান্সফার করা সবচেয়ে জরুরী ছিলো। সরকার কর্ণপাত করেনি। সেই কারণে অপরিকল্পিত লকডাউন ফলপ্রসূ হয়নি।
বাংলাদেশে টিকা সংগ্রহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক চৌধুরী হাফিজ হাসান, অধ্যাপক মাসুদুল হাসান, অধ্যাপক জিয়াউদ্দিন আহমেদ সাদেক এবং সাবেক ইউএন কর্মকর্তা মাহমুদ উদ সামস চৌধুরীর ব্যক্তিগত উদ্যোগের জন্য তাদের প্রতি দলের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব।
‘ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে উদ্বেগ’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার ও সিটি করপোরেশনগুলো ব্যর্থতার কারণে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। সিটি করপোরেশনগুলো এসিড মশা নিধনের বাস্তব সম্মত কোনো উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। জনগনকে সম্পৃক্ত করে এডিস মশা নিধনের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবিও জানান তিনি।