করোকালীন সময়ে গোপনে রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের (আরটিজেএ) নামে চাল বরাদ্দ নিয়ে আত্মসাত করার বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল।
গেল ১৬ সেপ্টেম্বর এ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সাংবাদিক সমাজের আহবায়ক সাইদুর রহমান জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে তিনি এ তদন্তের নির্দেশ দেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করার কারণে অসহায় জনগণ সরকারের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। সরকারের এই উদ্দোগটি সাধারন মানুষকে উপকৃত করেছে। কিন্তু স¤প্রতি আমরা অবগত হয়েছি যে, সাংবাদিক নামধারী এক অসাধু ব্যক্তি এই মহতী কাজেও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে ত্রাণ আত্মসাত করেছে। এই অসাধু ব্যক্তি হলো মেহেদী হাসান শ্যামল। সরকার বিরোধী মৌলবাদীদের এই দোসর রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে ২০২০ সালে ভুয়া সদস্য সংখ্যা দেখিয়ে ওই সংগঠনের নামে ১০০০ কেজি চাল বরাদ্দ নিয়ে আত্মসাত করেছে।
২০২০ সালে করোনা শুরুর পর পরই এক লটে রাজশাহী নগরীর ১৯টি পেশাজীবী সংগঠনের ৪ হাজার ৯০৮ জন সদস্যের মধ্যে ৪০ হাজার কেজি চাল রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসন থেকে বিতরণ করা হয়। ওই তালিকার ১১ নম্বরে রয়েছে রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের নাম। তৎকালীন সাধারন সম্পাদক মেহেদী হাসান শ্যামল তথ্য গোপন করে রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের নামে এই ত্রাণ চেয়ে আবেদন করেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ১০০০ কেজি চালও বরাদ্দ করা হয়। আবেদনে মেহেদী হাসান শ্যামল সংগঠনের সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে দেখায়। তাদের সদস্য ৪০ জন হলেও সে আবেদনে দাবি করে, তাদের সদস্য ৯৩ জন। এমনকি সদস্যদের জমা দেয়া তালিকাও ভুয়া। প্রতারণা করে সদস্য নয় এমন ব্যক্তির নাম দিয়ে তালিকা করে সে জমা দেয়। এরপর সেই ১০০০ কেজি চাল তুলে আত্মসাত করে। বিষয়টি জানাজানি হলে সংগঠনের দ্বি-বার্ষিক সাধারন সভায় এ নিয়ে তৎকালীন সাধারন সম্পাদক মেহেদী হাসান শ্যামল সদস্যদের ব্যাপক প্রশ্নের মুকে পড়েন। সেই সময় ওই নেতা ছাড়া সংগঠনের অন্য সব সদস্য এই ত্রাণের দায় নিতে অস্বীকার করেন। এক সময় মেহেদী হাসান শ্যামল চাপের মুখে স্বীকার করে যে এসব চাল সে একাই নিয়েছে। এই আলোচনা ও মেহেদী হাসান শ্যামলকে দায় স্বীকারের বিষয়টি রেজুলেশন আকারেও গ্রহন করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু মেহেদী হাসান শ্যামল দায় স্বীকার করলেও সাধারন সভার সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রেজুলেশন আকারে লিপিবদ্ধ করেননি।
এ ব্যাপারে রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি মেহেদী হাসান শ্যামলকে একাধিকবার ফোন দিলেও মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত শেষ হলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।