আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি এখনও তৎপর। তারা এখনও নানান ষড়যন্ত্র করছে। তারা এখনও এই বাংলাদেশকে পাকিস্তানের একটি অঙ্গরাজ্যে পরিণত করার চেষ্টা করছে। তাদের প্রতিহত করতে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। ষড়যন্ত্র হচ্ছে। যারা আজও পর্দার অন্তরাল থেকে নীল কুটির, লাল কুটির ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চায়। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। আগামীতে বিএনপি নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনের নামে জ্বালাও পোড়াও করতে চাইবে। তাদেরকে রাজনৈতিকভাবেই প্রতিহত করার জন্য নেতাকর্মীদের মোকাবেলা করার প্রস্তুতি নিতে বলেন মন্ত্রী।
রবিবার দুপুরে টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী একথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, যত দ্রুত সম্ভব ইউনিয়ন থেকে শুরু করে টাঙ্গাইল জেলা কমিটির সম্মেলন শেষ করা হবে। দলকে সুশৃংখল এবং ঐক্যবদ্ধ করে নতুন ও শিক্ষিত তরুন সমাজকে নেতৃত্বে আনা হবে। শিক্ষিত মানুষ দ্বারা দলকে পরিচালনা করতে হবে। তারা র্নিমোহ জাতীর বিবেক হিসেবে কাজ করবে। শুধু ধর্ম নিরপেক্ষতা বললেই মানবতাবাদী হবে না। সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে জাতীকে মানবিক চেতনায় উদ্ধুদ্ব করতে হবে। অতীতে আমরা টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে এবং আগামীতেও বিএনপি জামাতের আন্দোলন প্রতিহত করা হবে। বিএনপির মতো আওয়ামী লীগ কোনদিন চোরাগলি পথে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আসেনি। আওয়ামী লীগ সবসময় সহজ-সরল পথে হেঁটে, গণতান্ত্রিকভাবে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছে। সরকার গঠন করেছে, দেশ পরিচালনা করেছে এবং এখনও করছে। রাজাকার-আলবদরদের দিয়ে দল গঠন করে বিএনপি দেশের মুক্তিযোদ্ধাদেরকে হেয় ও ছোট করেছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বিএনপির জন্ম ক্যান্টনমেন্টে, বন্দুক-রাইফেলের নলের মুখে। অস্ত্রের ও ক্ষমতার ভয় দেখিয়ে বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মানুষকে বিভ্রান্ত, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ইতিহাস বিকৃত এবং মিথ্যাচার করে বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। রাজাকার-আলবদরদের দিয়ে বিএনপি গঠন করে দেশের মুক্তিযোদ্ধাদেরকে হেয় ও ছোট করা হয়েছিল। এবং এই রাজাকার-আলবদর ও যুদ্ধাপরাধীদেরকে ক্ষমতায় এনে বিএনপি দীর্ঘদিন দেশ শাসন করেছে।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ড. আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, তৃণমূলের কর্মীরা দলের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে। সামাজিক সম্মানটুকু ছাড়া আর কোন সুযোগ সুবিধা তারা পান না। কাজেই, তৃণমূলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচন হবে, প্রার্থী মনোনয়ন করা হবে। আওয়ামী লীগ একটি সুশৃঙ্খলিত এক রাজনৈতিক দল। নতুন প্রজন্মের মেধাবী তরুণদের আওয়ামী লীগের পতাকাতলে নিয়ে আসতে হবে। এই মেধাবীরা আগামী দিনে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আগামী নির্বাচনের আগে জেলার সম্মেলন শেষ করতে হবে। সংগঠনের কার্যক্রম শক্তিশালী করতে সম্মেলনগুলো আমাদের শেষ করতেই হবে। আগামী নির্বাচনের আগে আওয়ামীল লীগের সংগঠন সুশৃংখল ও সুসংগঠিত করাই আমাদের লক্ষ্য। জেলা ও উপজেলার সম্মেলন করে সংগঠনকে আমরা শক্তিশালী করতে চাই। সংগঠনের ছোটখাট ভুল, ভ্রান্তি আছে। তা আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করতে হবে।
বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক। এ সময় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের এমপি, ছানোয়ার হোসেন এমপি, হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী এমপি, তানভীর হাসান ছোট মনির এমপি, আহসানুল ইসলাম টিটু এমপি, আতাউর রহমান খান এমপিসহ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।